• বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৩ অপরাহ্ন

নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ

ট্রাম্প প্রশাসনের বাংলাদেশের পোশাকে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল, ২০২৫
ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি নতুন করে বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। এ তালিকায় আছে বাংলাদেশের নামও। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের পোশাকে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা উচিত হয়নি বলে মনে করেন নোবেলজয়ী মার্কিন অর্থনীতিবিদ পল ক্রুগম্যান।

মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

পল ক্রুগম্যান বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তে মার্কিন ক্রেতাদের জীবন বিঘ্নিত হবে। এতে মার্কিন নাগরিকদের জীবন আরও নিরাপদ হবে, সেই সম্ভাবনা নেই। বরং মার্কিনদের জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় নিরাপত্তার কথা বলে উৎপাদন ফিরিয়ে আনার চেষ্টার কথা বলা হচ্ছে। ক্রুগম্যানের মতে, এটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি বন্ধুস্থানীয় ও প্রতিবেশী দেশেও উৎপাদন করা প্রয়োজন। এতে সরবরাহব্যবস্থার ওপর ভরসা করা যায়।

তিনি আরও বলেন, এই উভয় বিবেচনায় বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কানাডা ও মেক্সিকোর মতো দেশের পণ্যে উচ্চ শুল্ক আরোপ করা ঠিক হয়নি।

সাক্ষাৎকারে মার্কিন বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ রবার্ট লাইথিজারের কথা বলেন ক্রুগম্যান।

তিনি বলেন, রবার্ট লাইথিজার ওয়াশিংটনে বাণিজ্য সংরক্ষণবাদী হিসেবেই পরিচিত। বাণিজ্যের জগতে তিনি এক রকম শয়তান হিসেবে পরিচিত, যদিও নিজের কাজটা তিনি খুব ভালো বোঝেন। সে কারণে সব মহলেই তিনি শ্রদ্ধার পাত্র।

নোবেলজয়ী এই মার্কিন অর্থনীতিবিদ আরও বলেন, রবার্ট লাইথিজার একজন স্বাধীনচেতা মানুষ। সেজন্য ট্রাম্প প্রশাসনে তার ঠাঁই হয়নি। হলে তিনি হয়তো বলতেন, বাংলাদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করা যাবে না।

সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে বাণিজ্য–ঘাটতি প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

পল ক্রুগম্যানের মতে, সব দেশই কিছু না কিছু পণ্য উৎপাদন করে যে পণ্য এক দেশ তৈরি করে না, সেটা তারা আরেক দেশ থেকে আমদানি করে। এখন কথা হচ্ছে, প্রতিটি দেশের সঙ্গেই যে বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে, এর কোনো কথা নেই। সবকিছুই হতে পারে।

তিনি বলেন, কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি থাকার অর্থ এই নয়, যে দেশের হাতে উদ্বৃত্ত আছে, সেই দেশ অন্যায্য বাণিজ্যনীতি অনুসরণ করছে। কিন্তু অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসনের মানুষেরা এসব বিশ্বাস করেন।

শুল্ক নির্ধারণের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে পল ক্রুগম্যান বলেন, বাণিজ্য–ঘাটতিকে সংশ্লিষ্ট দেশের আমদানি দিয়ে ভাগ করে শুল্ক হার নির্ধারণ করা এবং তার অর্ধেক হারে সেই দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করা—এই পদ্ধতি অবাস্তব।

তিনি আরও বলেন, আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্য পড়াতাম, তখন এ ধরনের কোনো পদ্ধতি আমি পড়াইনি।

প্রসঙ্গত, পল ক্রুগম্যান একজন প্রখ্যাত আমেরিকান অর্থনীতিবিদ, যিনি ২০০৮ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মুদ্রানীতির বিষয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ