বাগেরহাট প্রতিনিধি॥
বাগেরহাটের কচুয়ায় ভ্যানযোগে বাড়ি ফেরার পথে শাহীন শেখ (৩৫) নামে এক কৃষককে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার রাত আটটার দিকে কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের সম্মানকাঠি গ্রামের কেজি স্কুলের সামনে এই হত্যার ঘটনা ঘটে। পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও কি কারনে শাহীনকে কুপিয়ে হত্যা করেছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি। রোববার শাহীনের মরদেহের ময়না তদন্ত বাগেরহাট সদর হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত শাহীন শেখ মঘিয়া ইউনিয়নের খলিশা খালী গ্রামের আব্দুল গফফার শেখের ছেলে। শ্হাীন পেশায় একজন কৃষক ও কচুয়া উপজেলা তরমুজ চাষী সমিতির সভাপতি।
মঘিয়া ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নিহতের চাচা আব্দুল হালিম শেখ এই বলেন, আমার ভাতিজা শাহীন শেখ পেশায় একজন তরমুজ চাষী। সে শনিবার রাত আটটার দিকে স্থানীয় বড় আন্ধারমানিক গ্রামের পঙ্গু মার্কেটে কাজ সেরে তার জমির দিনমজুর সাখাওয়াতকে সঙ্গে নিয়ে ফিরোজ শেখের ভ্যানরিক্সায় চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এসময় সম্মানকাঠি গ্রামের কেজি স্কুলের সামনে পৌছলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা সম্মান কাঠি গ্রামের আনছার আলী শেখ এর ছেলে রিয়াজ(২৮),হায়দার খার ছেলে জিয়াখান(৩৫)অয়ুব আলীর ছেলে সাগর শেখ(৩০)এর ভাই সৈকত শেখ(২৭) সহ চেণা ১৩জন হায়দার খা ও তার জামাতা আকুবালি (আকু) এদেও নির্দেশে সশস্ত্র ওই দুর্বৃত্তরা ভাতিজা শাহীনের ভ্যানের গতিরোধ করে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করলে ভ্যানচালক ফিরোজ ও তার জমির দিনমজুর সাখাওয়াত ভয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। ওই দুর্বৃত্তরা শাহীনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে বীরদর্পে চলে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে বাগেরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আমার ভাতিজা শাহীন তার নয় বিঘা জমিতে তরমুজের চাষ করেছে। সে তরমুজ চাষী সমিতির সভাপতির দায়িত্বে ছিলো। সভাপতি হওয়ার পর ওই হামলা কারী কয়েকজনের তার সাথে বিরোধ হয়। সেই বিারোধের জেরে এই হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে।২০১৭ সালে এই তরমুজ চাষী সমিতির পদ নিয়ে এই হামলা কারীদের সাথে কয়েক দফায় বিরোধ হয় পরবর্তিতে আমার ভাতিজার মৎস ঘেরেও হামলা করে এরা।এ বিষয়ে কোর্টে এটি মামলা ও চলমান। আমার এই ভাতিজার রতন(৫) ওজুথী (১৮) মাসের দুটি সন্তান আছে,এই নাবালক শিশুদের যারা এতিম করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মুশফিকার শামস্ মেনন রাতে এই প্রতিনিধিকে বলেন, রাত পৌনে দশটার দিকে শাহীন শেখকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে তার স্বজনরা। শাহীনের দুই পায়ের রগ কেটে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার শরীরের মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ধারালো অস্ত্রের কোপেরও চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে হাসপাতালে আনার পথে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারনা করছি।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল কবির এই প্রতিনিধিকে বলেন, পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কৃষক শাহীন শেখকে কারা কি কারনে কুপিয়ে হত্যা করেছে তা জানতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। হত্যাকারীদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, মহিলা দল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও এসময় উপস্থিত ছিলেন।