• মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪৬ অপরাহ্ন

টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থী পরাজয়ের নেপথ্যে বিএনপি!

আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৩ এপ্রিল, ২০১৮

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি॥
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মো. শাফী খানের শোচনীয় পরাজয়ের নেপথ্যে স্থানীয় বিএনপি দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে জেলা-উপজেলা বিএনপির মধ্যে নানা মুখরোচক আলোচনা-সমালোচনাও হচ্ছে।
জানাগেছে, এলেঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নুর-এ আলম সিদ্দিকী(নৌকা) প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হন। তিনি ১৪ হাজার ১৬৫ ভোট পান । তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী এসএম শফিকুল ইসলাম সাফি তালুকদার নারিকেল গাছ প্রতীকে পান ৫ হাজার ৫৫৭ ভোট এবং বিএনপির মনোনীত প্রার্থী মো. শাফী খান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পান ৫ হাজার ৪৩৬ ভোট। মোট ৮ হাজার ৬০৮ ভোট বেশি পেয়ে নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন। বিএনপি প্রার্থী ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থীর মোট ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজার ৯৯৩টি। বিএনপির দুই প্রার্থীর সমন্বিত ভোটের চেয়ে তিন হাজার ১৭২ ভোট বেশি পান আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুর-এ-আলম সিদ্দিকী।
স্থানীয় রাজনৈতিক বোদ্ধাদের মতে, বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত এলেঙ্গা পৌরসভায় মেয়র পদে বিএনপি প্রার্থীর এমন শোচনীয় পরিণতির জন্য স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কর্মকান্ডকে দায়ী করা হচ্ছে। আগামি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শাফী খান দলীয় মনোনয়ন চাইতে পারেন এমন আশঙ্কায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিন, সহ-সভাপতি শুকুর মাহমুদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক হিরু ও উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের আহ্বায়ক শামীম আল মামুন মুকুলের নেতৃত্বে উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনের নেতাদেরকে মো. শাফী খানের পক্ষে অবস্থান নিতে বাঁধা দেন। তারা নেতাকর্মীদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে নির্দেশনা দেন। পৌর বিএনপির সভাপতি মো. শাফী খানকে জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতারা দলীয় মনোনয়ন দেয়ায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সদ্য বিএনপিতে যোগদানকারী এসএম শফিকুল ইসলাম তালুকদারকে বিদ্রোহী হিসেবে নির্বাচনে প্রার্থী করেন। পরে আওয়ামীলীগের প্রার্থীর সাথে আঁতাত করেন এবং দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের আওয়ামীলীগের প্রার্থীকে ভোট দিতে প্ররোচিত করেন। ফলে বিএনপির দু’প্রার্থীই পরাজয় বরণ করেন। মো. শাফী খানকে পরাজিত করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি লুৎফর রহমান মতিন ভোট প্রয়োগ করেন নি এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক হিরু প্রকাশ্যে নৌকার ব্যালটে সিল দেন। লুৎফর রহমান মতিনের কেন্দ্রে(রাজাবাড়ী কেন্দ্র) ধানের শীষ প্রতীকে মাত্র ৮৮ ভোট পেয়েছে। অথচ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে মো. শাফী খান প্রায় ১৪০০ ভোট পান।
নির্বাচনের বিএনপি প্রার্থীর পরাজয়ের জন্য কালিহাতী উপজেলার তৃণমূলের সাধারণ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা উপজেলা সভাপতি লুৎফর রহমান মতিনকে দায়ী করে অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ দাবি করছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সর্বত্র ব্যাপক সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ বিষয়ে বিএনপির প্রার্থী মো. শাফী খান বলেন, স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নগ্ন প্রতারণায় আমি পরাজিত হয়েছি এটা সত্য কথা। এছাড়া আওয়ামীলীগ প্রার্থী নুর-এ-আলম সিদ্দিকীর কর্মীরা পেশি শক্তি ব্যবহার করেছে, পরাজয়ের পিছনে এটাও নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম তালুকদার বলেন, আমরা চেষ্টা করেছি। কেউ কেউ নোংরামী করেছে এটা সত্য। কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সভাপতি শিল্পপতি লুৎফর রহমান মতিনের সাথে মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করা হলেও বরাবরের মতো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ