তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি॥
রাজশাহীর তানোরের তালন্দ ইউপির মোহর গ্রামে ওয়াকফ্ সম্পত্তির মোত্তাওয়াল্লি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তানোরের মোহর গ্রামবাসিরা মোত্তাওয়াল্লির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছেন। মোত্তাওয়াল্লি মোহাম্মদ আলী গোপণে কমিটি গঠন করায় কমিটি গঠন করা নিয়ে বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মোহাম্মদ আলী বহিরাগত লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে বলেও গ্রামবাসির অভিযোগ।
অপরদিকে মোত্তাওয়ালির বিরুদ্ধে অংশীদারদের হিস্যা না দিয়ে ওয়াকফ্ সম্পত্তির অর্থ তছরুপের বিরুদ্ধে পুরো গ্রামবাসি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তানোরের তালন্দ ইউপির মোহর গ্রামের মসজিদ, মাদরাসা ও বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য মোহর মৌজায় অবস্থিত প্রায় ১৫ একর ওয়াকফ্ সম্পত্তি দান করা হয়। কিšত্ত মোহর গ্রামের প্রভাবশালীরা অবৈধ ভাবে এসব ওয়াকফ সম্পত্তি জবরদখল করে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখে অর্থ আতœসাৎ করে চলেছে। গ্রামবাসী ওই ওয়াকফ্ এষ্টেটের মোত্তাওয়ালী পরিবর্তনের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তানোরের তালন্দ ইউপির মোহর গ্রামের মৃত সাফু কারিগর ও মৃত আইরন বেওয়া বিগত ১৯৪৭ সালেরর ২৪ এপ্রিল মোহর মৌজার ১৬৪ দাগে ২ একর ২৮ শতক, ১০৭৩ দাগে ৮২ শতক, ১০৮৫ দাগে ৩ একর ২ শতক, ১০৯৯ দাগে ১ একর ৮ শতক, ১১৩৮ দাগে ৩৬ শতক, ১১৩৯ দাগে ৩০ শতক, ১৩৪৮ দাগে ৩৯ শতক, ১৩৫২ দাগে ৩৫ শতক, ১৫৫৫ দাগে ৯৫ শতক, ১৬৮৮ দাগে ৮ শতক, ৩২৬৭ দাগে ৯০শতক, ৩৬৭৭ দাগে ৯০শতক, ৩৪০৬ দাগে ১৯ শতক, ১৫৪ দাগে ১ একর ২৩ শতক ও ১০৪০ দাগে ২ একর ৭৩ শতক সম্পত্তি মোহর গ্রামের বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের নামে ওয়াকফ রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছেন। কিšত্ত ওয়াকফ্ সম্পত্তিগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন মোহর গ্রামের দুই প্রভাবশালী এক জন দখলে রেখেছেন ১১ একর ৬৯ শতক এবং অপরজন দখলে রেখেছেন ৩ একর ৯৬ শতক।
গতকাল সরেজমিন, মোহর গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব ওয়াকফ্ সম্পত্তির দখল ও মোত্তাওয়ালী পরিবর্তনের দাবীতে গ্রামবাসী ফুঁসে উঠেছে। এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও চরম অসন্তোস বিরাজ করছে। এসব সম্পত্তিকে কেন্দ্র করে যে কোন সময় ঘটতে পারে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের ঘটনা যে কারণে গ্রামের সাধারণ মানুষ শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে মোহর গ্রামের ফোরকানিয়া মাদরাসার সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, ওয়াকফ্ সম্পত্তিগুলোর পরিমাণ প্রায় ৫০ বিঘা ও তিনফসলী হলেও বছরে তার মাদরাসায় মাত্র একমণ ধান দেয়া হয়। কিšত্ত এসব সম্পত্তির কোনো হিসেব গ্রামবাসীদের জানানো হয় না। মোহর গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল বাশার, রইস উদ্দীন বাচ্চু ও জালাল অভিযোগ করে বলেন, গ্রামের মসজিদ, মাদরাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এসব সম্পত্তি ওয়াকফ্ করা হয়েছে। কিšত্ত প্রভাবশালী মোহাম্মদ আলীর অপতৎপরতার কারণে সম্পত্তিগুলো এসব প্রতিষ্ঠানের কোনো উপকারে আসছে না। এব্যাপারে মোত্তাওয়াল্লি মোহাম্মদ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গ্রামের কিছু মানুষ তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।