রংপুর অফিস॥
তামাক ভাজার গন্ধে পুরো পরিবারে কাশি লেগেই আছে। একমাত্র সন্তান আলামিন (৭ম শ্রেণী) ঠিকমত পড়ার টেবিলে বসতেও পারে না। দিন দিন এ গন্ধ আরো বাড়ছে। এতে করে এলাকার সাধারন মানুষ সেখানে বসবসাস করা তাদের দুরুহ হয়ে পড়েছে। এসব কথা বলেন, রংপুর সদর উপজেলার উত্তম উত্তর পাড়া এলাকার নাসিমা বেগম।
নাসিমা বেগম আরও বলেন, তার বাড়ির পাশেই রয়েছে গুল ফ্যাক্টরী। এসব ফ্যাক্টরীর তামাক ভাজার ডাস্ট বের হওয়ার কোন চিমনি বা অন্য কোন পদ্ধতি নেই। যার কারনে এ ডাস্ট সরাসরি বাতাসে মিশে যাচ্ছে। গুল ভাজার গন্ধ ও ডাস্টের কারনে দুই যুগেরও বেশ সময় ধরে কষ্ট ভোগ করে আসছেন।
বয়সের ভারে ন্যুজ হয়ে পড়েছেন বাবলা মিয়া (৭২)। তামাকের ডাস্টের গন্ধের কারনে তার শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। এখন প্রায় সময় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তিনি জানান, আগে ভালোই ছিলেন। গুল ফ্যাক্টরী হওয়ার পর থেকে তার ও তার স্ত্রী সামিরনের এ রোগ ধরেছে।
স্থানাীয় ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, গুল ফ্যাক্টরীর আশ পাশে শতাধিক দোকান ঘর রয়েছে। তারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সব সময় নাকে রুমাল চেপে ধরে বসে থাকেন। গুল ফ্যাক্টরীর ডাস্টের কারনে তারা নাকাল হচ্ছেন।
নাসিমা, বাবলা এবং কবিরের মত আরো অনেকে গুলের ডাস্ট থেকে বাঁচার আকুতি জানান এভাবেই ।
চিকিৎসকদের মতে- গুলের এ ডাস্টের কারনে শুধু শ্বাসকষ্টই নয় আরো জটিল রোগও হতে পারে।
রংপুর নগরীর উত্তম উত্তর পাড়া এলাকায় ৩শতাধিক মানুষের বসতি রয়েছে। দুই যুগ আগে এই এলাকায় গড়ে উঠেছে কয়েকটি গুল ফ্যাক্টরী। গুল ফ্যাক্টরী গুলোতে তামাক ভাজা হয় দিনে- রাতে। ডাস্ট বের হওয়ার বিশেষ কোন ব্যবস্থা নেই ফ্যাক্টরীগুলোতে। যার কারনে এ ডাস্ট দ্রুত বাতাসের সাথে মিশে যাচ্ছে।
অভিযুক্ত এক গুল ফ্যাক্টরীর মানেজার তার ফ্যাক্টরীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর রংপুরের ভারপ্রাপ্ত উপ -পরিচালক মেজ- বাবুল আলম জানান, এ বিষয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবেন।
সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা জামান ববি বলেন, এ এলাকার পাশাপাশি মাহিগঞ্জ এলাকার একটি ফ্যাক্টরীর কারনে মানুষ কষ্টে বাড়ছে। জেলা প্রশাসকের সভায় এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে।