জুয়েল রানা লিটন॥
সাবেক ১৭ জেলার ঐতিহ্যবাহী একটি নোয়াখালী জেলা। এ জেলা নিয়ে আছে অনেক গান, গল্প, কৌতুক, অনেক হাস্যরস তথা রম্য কথা। সম্ভবত: বাংলাদেশের একমাত্র জেলা এই নোয়াখালী যার নিজ নামে তথা নোয়াখালী শহর নামে কোন শহর নেই। নোয়াখালী শহর মূলতঃ বহু আগেই নদীতে বিলীন হয়ে যায়। পরবর্তীতে মাইজদীকে নতুন শহর হিসাবে খ্যাতি দেওয়া হয়। কিন্তু যুগে যুগে একটা সমালোচনা সহ্য করেই চলছে নোয়াখালীতে দেখার মত কিছুই নেই। নোয়াখালীর এমন দুর্নাম/সমালোচনা দূর করতে এগিয়ে আসে নোফেল নামক একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা। তারা প্রথমেই অনেক চিন্তাশীল একটা নাম উপস্থাপন করেন যা ছিল নোয়াখালী “নো” ফেনীর “ফে” এবং লক্ষ্মীপুরের “ল” তথা বৃহত্তম নোয়াখালীর বর্তমান তিন জেলার নামের শুরুর অংশগুলো নিয়ে “নোফেল” যা নোয়াখালীবাসী সাদরে গ্রহন করে। ব্যাপক পরিমাণ সাড়া পেয়ে নোাফেল একটা গ্রুপ কোম্পনী হিসাবে আতœপ্রকাশ করে এবং স্বল্প সময়ের ব্যবধানে নোফেল হয়ে উঠে সর্বমহলে পরিচিত একটি প্রতিষ্ঠান।
প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান একজন ভালো মানের ব্যাংক এবং চিন্তাশীল ব্যাক্তিত্ব। পরিকল্পনা অনুযায় কাজ করাই তার স্বভাব। সদালাপলী মিষ্টিবাসী তিনি নোফেল গ্রুপের উদ্যোক্তাদের নিয়ে নোয়াখালীকে গর্বিত ও নন্দিত করর জন্য প্রথমে উদ্যোগনেন বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ একটা পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র তৈরীর। এ উদ্দেশ্যে সিংহভাগ জমি কিনে ফেলেন এবং বোর্ড মেম্বার, শেয়ার ও শেয়ার হোল্ডারগণের সহযোগীতা নিয়ে দ্রুত গতিতেই এগিয়ে চলেন।
নোয়াখালী ৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য মাটি ও মানুষের নেতা একরামুল করিম চৌধুরী প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ১৬ জুন, ২০১৫ ইং তারিখে। তারপর থেকেই কাজ চলতে থাকে এবং প্রাইমারী কাজ করেই নোফেল ড্রীম ওয়ার্ল্ডকে আনুষ্ঠনিক উদ্বোধন করতে এমপি সাহেবের স্মরণাপন্ন হন। এমপি সাহেব মৌখিকভাবে অনানুষ্ঠানিক চালু করার কথা বলে দেন এবং বললেন যে আপনাদের আরো অনেক কাজ বাকী আছে। কাজগুলো শেষ করে আমার সাথে যোগাযোগ করবেন, আমি সময় সুযোগ করে আনুষ্ঠনিকভাবে প্রকল্পটি উদ্বোধন করে দিবো। নোফেল গ্রুপ যথারীতি এমপি সাহেবের দিক নির্দেশনা মতে আনুুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন ২০১৬ সালের ১৪ এপ্রিল তথা বাংলা নববর্ষ ১ বৈশাখ থেকে নোফেল গ্রুপ প্রাইমারী কিছু কাজ করেই বিনোদন কেন্দ্রটি আননুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করলে দর্শনার্থী ভালোভাবেই সাড়ার পাওয়া যায়। আর এতে কারো ঈর্ষার কারণ হয়। কারণ নোয়াখালীর অনেক বড় বড় ব্যাক্তি তথা রাঘব, বোয়াল থাকলেও নিজের জেলাকে এমন আলোড়ন সৃষ্টিকারী কোন বিনোদন কেন্দ্র তৈরীর পদক্ষেপ কেউ নেয়নি।
এদিকে ড্রিম ওয়ার্ল্ড নামক বিনোদন কেন্দ্রটির কারণে নোফেল গ্রুপ আলোচনা র্শীষে উঠে আসে। এতে অনেকেই হিংসা শুরু করে এবং নোফেলের ব্যাপারে ব্যাপক অপপ্রচার চলানো শুরু করে। প্রচারটি একসময় এমন পর্যায়েই পৌছে যে, নোফেল গ্রুপের উদ্যোক্তাদের মধ্যে জামায়াতে কোন নেতা না থাকলে ও এটা জামায়াতের প্রতিষ্ঠান বলে প্রচারণা তুঙ্গে তুলে দেয়া হয় এবং রীতিমত ব্রান্ড হয়ে যায়। ফলে এমপি সাহেব বাধ্য হয়ে বিনোদন কেন্দ্রটিকে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন।
অপরদিকে নোফেল গ্রুপের সবদিক ছিল, কিন্তু তারা ১টা সংকীর্ণতার পরিচয় দিয়েছে। সেটা হলো উদ্যোক্তার ব্যবসায়ী মহলের বা প্রবীণ কোন মুরুব্বীকে সাথে নিয়ে প্রতিষ্ঠানকে সর্বজনীন হিসাবে তুলে ধরতে পারেনি। তারা জামায়াতের কোন নেতা না থাকলেও সমর্থক জাতের লোক হয়েও দলীয় সংকীর্ণতাকেই প্রমাণ করছেন। তারা ভেবেছে ব্যাপক দর্শনার্থী যেভাবে তাদেরকে সাড়া দিয়েছে তাতে তারা বিশাল শক্তি অর্জন করে ফেলেছে। এমন নির্বুদ্বিতা তাদের চলার পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়।
এমতাবস্থায়, শুধু ড্রিম ওয়ার্ল্ড প্রজেক্ট বন্ধ থাকার কারণে পুরো নোফেল গ্রুপের কর্মকান্ড গতিহীন হয়ে পড়ে এবং দর্শনার্থীদের আস্থা বিশ্বাসের যে হিমালয় তৈরি হয়েছে তা গলতে শুরু করে।
একসময় চতুর্মুখী চাপে পড়ে নোয়াখালী শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু স্মরণাপন্ন হয় নোফেল গ্রুপ। এরপর কিছু বন্ধুবান্ধবের সাথে পরামর্শক্রমে এমপি সাহেবের সাথে আলোচনা করেন এবং তার নিদের্শনা অনুযায় নোফেল গ্রুপের উদ্যোক্তদের নিকট থেকে লিজিং প্রক্রিয়া প্রকল্পটি চালু করে দেন। ধীরে ধীরে এখন প্রকল্পটি কাজও এগিয়ে চলছে উন্নয়নও চলছে।
ক্ষুদ্র অগণিত বিনোয়াগকারীরা তাদের র্দীঘদিনের স্বপ্নের বাস্তাবায়ন দেখতে পাচ্ছে। তাই তাদের অনেকেই বলতে শুনা যাচ্ছে, ‘একটি ডুবিয়মান তরীকে আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু ভাই অবশেষে তীরে ভিড়ালেন। বিনোয়গকারীরাও দর্শনাথীরা আরো বলছেন, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিনোয়াগকারী নিরিহ মানুষ গুলো র্দীঘদিনে লালিত স্বপ্নটিকে ধীরে গতিতে হলেও বাস্তাবয়ন করে সামনে এগিয়ে নিলে আব্দুল ওয়াদুদ পিন্টু ভাই হবেন নোয়াখালী জেলার জনপ্রিয়তার এক তারকার নাম।