উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি॥
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার প্রত্যন্ত নিচু এলাকার উধুনিয়া- মহেষপুর সড়কপথের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা আজও হয়নি। প্রায় বিশ বছর আগে প্রায় পাচ কিলোমিটার সড়ক পথে সহজ, সুষ্ঠ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়তে আগাম ৭টি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। এতে সে সময় সরকারী প্রায় সাড়ে ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। অথচ উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার বদলে ব্রীজগুলো হয়ে চলাচলেই কষ্ট হয়। অনেকটা দুর্ভোগের হয়ে দেখা দিয়েছে বলা চলে। অপরদিকে একই এলাকার বিনায়েকপুর-উধুনিয়া প্রায় সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়ক পথেরও একই অবস্থা হয়েছে। প্রায় দেড় যুগ আগে এ সড়কে নির্মিত দু’টি ব্রীজের একটি শুধুই দেখার হয়ে দাড়িয়ে আছে। ব্রীজটি হয়ে কোনো যানবাহন তো দুরের কথা কেউ কোনো দিন পায়ে হেটেও পার হতে পারেনি বলে জানা যায়। এ সড়ক দু’টি নিয়ে স্থানীয় এলজিইডি’র নতুন পরিকল্পনা করছে বলে জানানো হয়।
উল্লাপাড়া উপজেলার প্রতাপ থেকে উধুনিয়া বাজার পর্যন্ত প্রায় সোয়া ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কপথের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা করতে অতিতে স্থানীয় এলজিইডি থেকে পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে প্রতাপ থেকে মহেষপুর ঢালু পর্যন্ত প্রায় ৮ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণ হয়েছে। উল্লাপাড়া এলজিইডি’র আওতায় বিগত ১৯৯৮ সালে মহেষপুর থেকে উধুনিয়া পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার কাচা সড়কপথের বিভিন্ন স্থানে ৭ টি ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি ব্রীজ নির্মাণে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা করে ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। এতে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এ ব্রীজগুলো নির্মাণ সময়কাল থেকে প্রায় ২০ বছর পার হতে চলেছে। এতো বছরেও সড়কপথটির আর উন্নয়ন হয়নি। সেই কাচা সড়কপথ অবস্থাতেই রয়েছে। এসড়কের বেশির ভাগই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই বেশ বেহাল দশা দেখা দেয়। সরেজমিনে গিয়ে পুরো সড়ক পথে বেশ বেহাল দশা দেখতে পাওয়া গেছে। ব্রীজগুলো সড়ক পথ থেকে বেশ উচু করে নির্মাণ করা হয়েছে। সব ক’টি ব্রীজের দু’পাশের ঢালু সড়ক অনেকটা ধসে গেছে। স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবছরই স্বাভাবিক বন্যাতেই এখানকার গোটা এলাকা পানিতে ডুবে যায়। এ সড়কপথও পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে থাকে । সে সময় শুধুমাত্র ব্রীজগুলো উপরের কিছু অংশ জেগে থাকে বলে তারা জানান। এ অবস্থা বর্ষা মৌসুমের ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস থাকে।
অপরদিকে বিনায়েকপুর থেকে উধুনিয়া পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার সড়কপথের মাঝামাঝি দীঘলগ্রামে বিগত ২০০০ সালে স্থানীয় এলজিইডি’র আওতায় দু’টি ব্রীজ নির্মাণ হয়েছে। এর একটি ব্রীজ হয়ে চলাচল করা গেলেও অপরটি নির্মাণ পর থেকেই আজও যেন শুধু দেখার হয়ে দাড়িয়ে আছে। এটি নির্মাণে সরকারী ৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে জানা যায়। এ ব্রীজের নির্মানের পর সে সময় দু’পাশ্বের সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। সে কারণে যানবাহন কিংবা পায়ে হেটে চলাচলে ব্রীজটি ব্যবহার আজও কেউ করতে পারেনি বলে জানা যায়। বন্যাকালে এ সড়কটি পানিতে তলিয়ে থাকে।
উল্লাপাড়া এলজিইডির প্রকৌশলী মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, সড়ক দুটি উচু করে নির্মাণ করা হবে ভেবেই হয়তো সে সময় ব্রীজগুলো এভাবে নির্মাণ হয়েছে। সেখানে বাস্তবে বন্যা কবলিত এলাকা বলে সড়কগুলো স্থায়ী হবে না ভেবেই এলাকাগুলোয় এখন সাবমারজেবল সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। গয়হাট্রা থেকে বিনায়েকপুর হয়ে চয়ড়া পর্যন্ত এবং দিঘলগ্রাম হয়ে বিনায়েকপুর সড়কের উধুনিয়া থেকে এক কিলোমিটারেরও বেশি সাবমারজেবল সড়ক নির্মান নির্মাণ করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন উধুনিয়া- মহেষপুর ও বিনায়েকপুর সাবমারজেবল সড়ক নির্মাণ করা হবে। সিরাজগঞ্জ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এটি করা হবে। এর জন্য অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলেই কাজ করা যাবে। তখন ব্রীজ গুলোর নির্মাণ কাঠামো ভেঙ্গে সাবমারজেবল সড়কের উপযোগী করা হবে বলে জানান।