পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি॥
বছরে ২৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের উৎস্য ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের পলেস্তারা খসে ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। দেয়ালেও দেখা দিয়েছে ফাটল। বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষার পেতে ছাদে নিচে লাগানো হয়েছে পলিথিন, যাতে ঘরের ভিতরে পানি পড়ে নষ্ট না হয় প্রয়োজনীয় দলিল-দস্তাবেজ। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। দলিল লেখক ও ভূমি ক্রেতা-বিক্রেতাদেরও দিন কাটছে দূর্ঘটনার আশংকায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসের ছাদের পলেস্তারা খসে কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। ছাদের বিমে ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলোয় মরিচা ধরে নষ্ট হচ্ছে। কার্যালয়টির দেয়ালেও দেখা দিয়েছে ফাটল ধরেছে। ভবনের অনেক স্থানে মেঝের ঢালাই উঠে গেছে। বিদ্যুৎ লাইনও ঝুকিপূর্ন। বর্ষার সময় বৃষ্টির পানি ও শীতের সময় শীত ছাদের ভিতর দিয়ে চুয়ে পড়ে। তাই রেকর্ড রুমে লাগানো হয়েছে পলিথিন। বালাম বহিসহ জমির দলিল ও গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র পানি থেকে বাঁচাতে পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয় সব সময়। চার কক্ষের এ জরাজীর্ণ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসটিতে কার্যক্রম চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কার্যালয়ের পাশে সাব-রেজিষ্ট্রার, অফিস ষ্টাফ ও মোহরারদের আবাসিক ভবন। বাসভবন তিনটিরও একই অবস্থা।
অফিস সূত্র জানায়, ১৯৭৪ সাল থেকে জেলার পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল, হরিপুর ও পার্শ্ববর্তী দিনাজপুর জেলার বোচাগঞ্জ উপজেলার জমি-জমা বিক্রির রেকর্ড পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিসে রক্ষিত আছে। রেকর্ড সংরক্ষণের গুরুত্বের জন্য ৭৮-৭৯ অর্থ বছরে পীরগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রী অফিস ভবনসহ কার্যালয়ের পাশে নিজেস্ব জমিতে সাব-রেজিষ্ট্রার, অফিস ষ্টাফ ও মোহরারদের আবাসিক ভবন নির্মান হয়। তারপর থেকে প্রায় ৪০ বছর আর মেরামত হয়নি। অবশ্য ১৫/১৬ আগে এ অফিসের এক একর জমিতে বাউন্ডারী ওয়াল করে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মোজাম্মেল হক আসেন জমি ক্রয়ের দলিল করতে। তিনি বলেন, মাঝে মাঝে আসতে হয় রেজিষ্ট্রী অফিসে। ভবনের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকলে বুকের ভেতর ধড়ফড় করে। খানিক পরপর ছাদ থেকে বালু ঝুরঝুর করে মাথায় পড়ে।
বেগুনগাঁও গ্রামের সিরাজ উদ্দীন মেম্বার বলেন, ‘অনেক দিন ধরে রেজিষ্ট্রী অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় এই বুঝি পলেস্তারা খসে পড়লো! তাছাড়া যেভাবে ভূমিকম্প হচ্ছে তাকে যে কোন সময় এ ভবনটি ভেঙ্গে পরে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
সাব-রেজিষ্ট্রার মোজাহারুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি গণপূর্ত বিভাগ এ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষনা করেছে। ভবন পুনঃনির্মানের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কে চিঠি দেয়া হয়েছে। নতুন অফিস ভবন নির্মানের জন্য পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গাও আছে।
৩০১ আসনে এমপি সেলিনা জাহান লিটা জানান, নতুন ভবন নির্মানের জন্য গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে। আশাকরি এ অর্থবছরেই নির্মান কাজ শুরু হবে।
ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের এমপি ইয়াসিন আলী জানান, জরুরী ভিত্তিতে নতুন ভবন নির্মান করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষ কে ডিও লেটার প্রদান করা হবে।