মাস দু’য়েক তেমন হামলা হয়নি ইউক্রেনের রাজধানীতে। কিন্তু শনিবার রাতে কিয়েভে আছড়ে পড়ল রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। এরপরে ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী এলাকায় শুরু হয়েছে ড্রোন হামলা।
গত বছরের শীতে ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডের উপরে হামলা চালিয়েছিল রাশিয়া। ফলে প্রবল শীতে বিদ্যুৎ ও হিটিং ব্যবস্থা ছাড়াই থাকতে হয়েছিল কয়েক হাজার ইউক্রেনবাসীকে। আগামী শীতেও এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সরকারের। রোববার কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সের্গেই পপকো বলেন, ‘৫২ দিন পরে শত্রু ফের কিভের উপরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে।
মধ্য কিয়েভে হাজির দুই সাংবাদিক জানান, তারা দু’টি প্রবল বিস্ফোরণ শুনতে পান। দেখতে পান ধোঁয়াও। তার পরেই বেজে ওঠে সাইরেন। কিন্তু বিস্ফোরণের পরে সাইরেন বাজল কেন? ইউক্রেনের বিমানবাহিনীর মুখপাত্র উরি ইগনাতের মতে, ‘ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অত্যন্ত দ্রুত ওড়ে। রেডারে তা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের মতো দেখা যায় না।’ কিয়েভে এ দিন ইসকান্ডার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র না এস-৪০০ বিমানবিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী।
মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি জানান, পশ্চিম সীমান্তে আরও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে কিয়েভ। কারণ, আগামী শীতে রুশ বাহিনী ফের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালাবে বলে ধারণা তাদের। তারাও রাশিয়ার তেল ও গ্যাস পরিকাঠামোর উপরে পাল্টা হামলা চালাতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইউক্রেন। বিদ্যুৎমন্ত্রী গেরমান গালশেঙ্কোর মতে, ‘যদি ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডের উপরে ক্রমাগত হামলা হয় তবে রুশ বিদ্যুৎ গ্রিডের উপরে পাল্টা হামলা চালানোর অধিকার আছে ইউক্রেনের।
মধ্য কিয়েভেও বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে। তবে কেউ হতাহত হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে পাঁচটি আবাসিক ভবন ও বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন আঞ্চলিক গভর্নর রুসলান ক্রাভচেঙ্কো। দুটি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র বসতির মধ্যবর্তী একটি মাঠে আঘাত হেনেছে বলে জানান তিনি।
ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণাঞ্চলেও ড্রোন হামলা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, তারা শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার স্থানীয় সময় ভোর ৩টা পর্যন্ত রাশিয়ার ৩১টি ড্রোনের মধ্যে ১৯টি ভূপাতিত করেছে। ভূপাতিত ড্রোনের সবগুলোই ইরানের তৈরি ‘শাহিদ’ ড্রোন বলে জানিয়েছেন তারা।