• শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:০৯ অপরাহ্ন

রাশিয়ার ভেতরে ইউক্রেনের অভিযান

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
- সংগৃহীত

রাশিয়া রোববার দাবি করে, তারা কুরস্কের পশ্চিমাঞ্চলে ইউক্রেনের অগ্রগতি থামিয়ে দিয়েছে। এগুলোর কয়েকটি জায়গা রাশিয়া-ইউক্রেন সীমান্ত থেকে ৩০ কিলোমিটার ভেতরে।

প্রথমবারের মতো, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি পরোক্ষভাবে শনিবারের শেষের দিকে স্বীকার করেন, কিয়েভের বাহিনী গত ছয় দিনে তাদের লড়াই রাশিয়ার ভেতরে নিয়ে গেছে। কিন্তু রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তাদের সৈন্যরা ‘সাঁজোয়া যানসহ শত্রুদের ভ্রাম্যমাণ দলের রাশিয়ার ভূখণ্ডের আরো গভীরে প্রবেশের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে।’

রাশিয়া বলে, তারা ইউক্রেনীয় সীমান্ত থেকে ২৫ এবং ৩০ কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে টোলপিনো এবং ওবশচি কোলোদেজ গ্রামের কাছে ইউক্রেনের অগ্রযাত্রাকে আটকে দিয়েছে।

জেলেন্সকি তার রাতের টেলিভিশন ভাষণে, ‘যুদ্ধকে আগ্রাসীদের অঞ্চলে ঠেলে দেয়ার জন্য’ ইউক্রেনের চলমান সামরিক পদক্ষেপের কথা স্বীকার করেন।

কিন্তু এ যুদ্ধ অন্য জায়গায়ও চলতে থাকে।

রোববার ভোরের দিকে, কিয়েভকে লক্ষ্য করে রাশিয়ার একটি ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় একজন ৪ বছর বয়সী বালকসহ দুই ব্যক্তি নিহত হয়।

রাশিয়ার কুরস্কের আঞ্চলিক গভর্নর বলেন, রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী ইউক্রেনের একটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করার পর তার ধ্বংসাবশেষ একটি আবাসিক ভবনের উপর পড়লে ১৫ জন আহত হয়।

ইউক্রেনের রাষ্ট্রীয় জরুরি সার্ভিস রোববার জানায়, কিয়েভের শহরতলির ব্রোভারির একটি আবাসিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো পড়ার পর ধ্বংসস্তূপের নিচে ৩৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি এবং তার ছেলের লাশ পাওয়া যায়। হামলায় আরো তিনজন আহত হন।

কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান সের্হি পপকো বলেন, এই মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কিয়েভ মেট্রোপলিটন এলাকাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

পপকো বলেন, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রাজধানীতে পৌঁছায়নি কিন্তু ওই শহরতলিতে আঘাত হেনেছে। কিন্তু এলাকাটিকে লক্ষ্য করে পাঠানো ড্রোনগুলো ভূপাতিত করা হয়।

রোববার রাশিয়ায় ইউক্রেনের অনুপ্রবেশ ষষ্ঠ দিনে পৌঁছেছে এবং রাশিয়ার মাটিতে ইউক্রেনের সামরিক ইউনিট ব্যবহারের জন্য এটি নজিরবিহীন। অপারেশনের সঠিক লক্ষ্য এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। ইউক্রেনের সামরিক কর্মকর্তারা গোপনীয়তার নীতি গ্রহণ করেছেন এবং জেলেন্সকি তার রাতের ভাষণে বিস্তারিত বলেননি।

রাশিয়ায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, কুরস্ক, ভোরোনেজ, বেলগোরড, ব্রায়ানস্ক ও ওরিওল অঞ্চলে ৩৫টি ইউক্রেনীয় ড্রোন আগের রাতে গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে।

রাশিয়ার অভ্যন্তরে রোববার ড্রোন হামলার বিষয়ে ইউক্রেন কোনো মন্তব্য করেনি। তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেন মূলত সামরিক অবকাঠামো এবং তেল ডিপোকে লক্ষ্য করে অনুরূপ ড্রোন হামলা বৃদ্ধি করেছে।

তার শনিবারের ভাষণে, জেলেন্সকি রাশিয়ার আক্রমণের সাথে সরাসরি জড়িত তার সৈন্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেন প্রমাণ করছে যে- তারা সত্যই ন্যায়বিচার আনতে পারে এবং ঠিক যে ধরনের চাপের প্রয়োজন, আগ্রাসীর উপর ঠিক সেই চাপের নিশ্চয়তা দেয়।’

রাশিয়া শনিবার বলেছে, কিয়েভের বাহিনী প্রাথমিকভাবে প্রায় ১০০০ জন সৈন্য, ২০টি সাঁজোয়া যান এবং ১১টি ট্যাংক নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে, যদিও তারা এখন পর্যন্ত তার চেয়ে পাঁচগুণ বেশি সামরিক হার্ডওয়্যার ধ্বংস করেছে বলে দাবি করে।

রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র বেলারুশ শনিবার কিয়েভের অনুপ্রবেশের প্রতিক্রিয়ায় সীমান্তের কাছে তাদের সামরিক শক্তিবৃদ্ধি করছে। তাদের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা স্থল সেনা, বিমান ইউনিট, বিমান প্রতিরক্ষা এবং রকেট সিস্টেমকে ইউক্রেনের সীমান্তের কাছাকাছি মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে।

রাশিয়ার পারমাণবিক সংস্থা শনিবার যুদ্ধ থেকে ৫০ কিলোমিটারেরও কম দূরে নিকটবর্তী কুরস্ক পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি হুমকির মুখে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করে।

পারমাণবিক শক্তি সংস্থা রোসাটমকে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো উদ্ধৃত করে বলে, ‘ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর কর্মকাণ্ড পশ্চিম রাশিয়ার কুর্স্কে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির জন্য সরাসরি হুমকি সৃষ্টি করে।’

শুক্রবার, আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার প্রধান, অনুরূপ উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবংন ‘সর্বোচ্চ সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানান।

শনিবার জেলেন্সকির মন্তব্য সত্ত্বেও, ইউক্রেনের নেতারা এই অভিযানের বিষয়ে মুখ খুলছেন না।

কিয়েভের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, হামলার পরিকল্পনার কথা আগে তাদের জানানো হয়নি।
সূত্র : ভয়েস অফ আমেরিকা


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ