• বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, আহত দেড় শতাধিক

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ। হামলা পাল্টা হামলায় রাতদিন ছিল উত্তেজনা। শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা ও রোববার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে দেড় শতাধিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

রোববার দুপুর ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়। এর পর দুপুর ২টায় সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র‌্যাব মিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

জানা গেছে, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার থানা সদর পয়েন্টে রনি ফার্মেসিতে মোবাইল চার্জ দেওয়াকে কেন্দ্র করে তর্কাতর্কি হয় বর্ণি ও ইসলামপুর গ্রামের দুজনের মধ্যে। এ সময় তর্কে জড়ান কাঠালবাড়ি গ্রামের আরেকজন। এ ঘটনার মাধ্যমেই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।

এরপর সন্ধ্যায় একপক্ষ সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের বর্ণি পয়েন্টে যানবাহন আটক করে। পরে একপক্ষে বর্ণি, কোম্পানীগঞ্জ, দক্ষিণ বুড়দেও ও আরেকপক্ষে কাঁঠালবাড়ি গ্রাম সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে। রাত ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সেনাবাহিনী।

রাতে সংঘর্ষে ১৫টি দোকান ও ১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও দুটি মোটরসাইকেল অগ্নিসংযোগ করা হয়। আহত হন অন্তত ৬০ জন।

পরদিন রোববার সকালে বর্ণি পয়েন্টে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ও তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে ফের সংঘর্ষে নামেন বর্ণি গ্রামের লোকজন। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় কোম্পানীগঞ্জ গ্রাম ও দক্ষিণ বুড়দেও গ্রামের একাংশের লোকজন। এরপর তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়কের ব্রিজের উপর অবস্থান নেয়।

অপরদিকে কাঁঠালবাড়ি গ্রামের লোকজন থানা সদর পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয় ও সংঘর্ষে লিপ্ত জড়িয়ে পড়ে। এতে অন্তত ৯০ জন আহত হয়।

দুপুর ২টায় মেজর ফয়সাল আহমেদের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্যের একটি দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের নেতৃত্বে ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার সাহিদুর রহমান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ কামরুজ্জামান যুগান্তর বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ১১০ জন আহত রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছি। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সংঘর্ষের ঘটনায় ৫৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ৪ জনকে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাতে ৫২ জন চিকিৎসা নিয়েছিলেন।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান জানান, শনিবার রাতে সেনাবাহিনীসহ আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। রোববার সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে ফের সংঘর্ষে লিপ্ত হয় উভয়পক্ষ। দুপুরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়া জানান, বিকাল ৫টায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ও জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন ও তেলিখাল ইউপির চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল অদুদ আলফু মিয়া মধ্যস্থতায় উভয়পক্ষকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। উভয়পক্ষকে সংঘর্ষ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ