• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

ব্যাংকিং খাতে দেখা দিতে পারে ইমেজ সংকট স্পর্শকাতর খাত হওয়ায় নেতিবাচক কিছু হলেই তা বিভ্রান্তি ছড়ায়

আপডেটঃ : রবিবার, ৪ মার্চ, ২০১৮

দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ব্যাংকিং খাতের ইমেজ পুনরুদ্ধারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। স্পর্শকাতর খাত হওয়ায় এ নিয়ে নেতিবাচক কিছু হলেই তা জনমনে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি ছড়ায়। কিন্তু বাস্তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ব্যাংকিং খাতে নানা ঘটনা ঘটে থাকে। সেসব নিয়মের মধ্যেই সমাধা করা হয়।
ব্যাংক ঋণ দেয় আর সেই ঋণের অর্থ উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা তাদের ব্যবসায় বিনিয়োগ হিসাবে কাজে লাগান। সেই বিনিয়োগকৃত অর্থের উপর দাঁড়িয়ে পণ্য উত্পাদিত হয়। পণ্য বাজারজাত হয়ে ফিরে আসে অর্থ। ফিরে আসা এ অর্থ থেকেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, কাঁচামাল ক্রয়, ব্যাংক ঋণ পরিশোধসহ আনুষঙ্গিক খরচ বাদ দিয়ে তা থেকে লাভ করেন উদ্যোক্তা-ব্যবসায়ী। এভাবেই চলে ব্যবসা। কিন্তু মন্দা, দুর্যোগ কিংবা অন্য কোনো সমস্যা হলেই এর ব্যতিক্রম ঘটে। তখন ব্যবসায়ীরা স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা করতে পারেন না। বাকি পড়ে ব্যাংকের কিস্তি। এভাবে চলতে থাকলে একসময় ওই ব্যবসায়ী খেলাপি হয়ে পড়েন। ব্যাংকও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ অবস্থায় সবকিছু বন্ধ করে না দিয়ে বরং আপত্কালীন ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নিয়ে পুনরুদ্ধার করাই শ্রেয়। তাতে কর্মসংস্থান ও জাতীয় প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশেও এর উদাহরণ রয়েছে।
তবে যদি কোনো অনিয়মের ঘটনা ঘটে থাকে, তা সুষ্ঠু তদারকি কিংবা আইনগত ভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করাই স্বাভাবিক। কিন্তু দু’চারটি অনিয়মের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা ব্যাংকিং খাত কিংবা কোনো ব্যাংক শেষ হয়ে গেছে এমন দোষারোপ করা উচিত নয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যবসার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সচল থাকে। ব্যবসায়ীরাই অর্থনীতিকে সম্মুখে নিতে সহায়তা করে থাকেন। তবে বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন। আর ব্যবসা সব সময় একরকম যায় না। ব্যবসায় অনেক ঝুঁকি থাকে। ব্যবসায়ীরা সে ঝুঁকি মাথায় নিয়ে ব্যবসা করেন। একইভাবে এসব ঝুঁকি আছে জেনেই ব্যাংক অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে। তবে ব্যবসায়ী কোনো সমস্যায় পড়লে সে কারণে ব্যাংকও সমস্যায় পড়ে। তাই বলে সবকিছু শেষ হয়ে যায় না।
উন্নত কিংবা অনুন্নত হোক, বিশ্বের অনেক দেশেই এরকমটি হয়ে থাকে। সরকার পুনরায় তহবিল যোগান দেয় এবং ব্যাংকিং খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করে। কিন্তু কোনো ব্যাংক খারাপ অবস্থায় পড়লে গোটা ব্যাংকিং খাতই খারাপ এমন প্রচারণার সুযোগ নেই। এধরনের নেতিবাচক প্রচারণা বরং বিদেশে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে। এমনকি বিদেশি ব্যাংক ঐ ব্যাংকের সঙ্গে ব্যবসায় করতেও অপারগতা প্রকাশ করতে পারে। তা আন্তর্জাতিক ভাবে দেশের আর্থিক খাতের জন্য মোটেই শুভ নয়।
বাংলাদেশেও সরকারি ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন সময়ে অর্থ যোগান দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ঐসব ব্যাংক আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। কাজেই ব্যাংকিং খাত শুধু কতিপয় ব্যাংকের ওপর নির্ভর করে না। বরং কোনো ব্যাংক ব্যবসায় খারাপ করলে তা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় সহায়ক ভূমিকা রাখাই যৌক্তিক। অন্তত দেশের ইমেজের স্বার্থে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, যখন কোনো ব্যবসায়ী ব্যাংকের ঋণের কিস্তি দিতে অপারগ হন অথবা ঋণ খেলাপি হয়ে পড়েন তখন ব্যাংকের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দরকার। তাদেরকে বিশেষভাবে নার্সিং করা দরকার। প্রয়োজনে তাদেরকে সময় বাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া এ আপত্কালীন সময়ের সুদ মওকুফ করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ