• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম:

কৃষিখাতে কর্মসংস্থান কমছে ধারাবাহিকভাবে

আপডেটঃ : বুধবার, ২১ মার্চ, ২০১৮

দেশে কৃষিখাতে নতুন কর্মসংস্থান আগের বছরের চেয়ে কমেছে। বেড়েছে সেবা খাতে। এক বছরের ব্যবধানে শিল্প খাতে নতুন কর্মসংস্থান বেড়েছে মাত্র দুই লাখ। সার্বিকভাবে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দেশে ১৪ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। এর সিংহভাগ হয়েছে সেবা খাতে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) শ্রমশক্তি জরিপ প্রতিবেদনে এমনটি উঠে এসেছে। ত্রৈ-মাসিক ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরী করা হলেও বছর শেষে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিবিএস। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে  প্রকাশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশে ২ কোটি ৬২ লাখ মানুষ কৃষিখাতে নিয়োজিত থাকলেও এর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এই সংখ্যা ছিলো ২ কোটি ৫৮ লাখ। অন্যদিকে গেলো ২০১৬-১৭ অর্থবছর এই সংখ্যা ২ কোটি ৪৭ লাখে নেমে এসেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থনীতির ‘টেকঅফ’ সময়কালে দেশের কর্মসংস্থানের চিত্রেও পরিবর্তন আসে। ব্যাপক হারে অপ্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন খাতের শ্রমশক্তি প্রাতিষ্ঠানিক খাতে চলে আসে। তাছাড়া প্রযুক্তির ব্যবহার ও উন্নত পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে কৃষিখাতে শ্রম শক্তি হ্রাস পায়। শিল্প ও সেবা খাতে বৃদ্ধি পায়।
কিন্তু বিবিএস এর তথ্যানুযায়ী সে হিসাবে শিল্প খাতে নতুন কর্মসংস্থান বাড়ছে ধীরে। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মসংস্থানের বড় অংশ সেবা খাত নির্ভর। ২০১০ ও ২০১৩ সালে শিল্প খাতে ১ কোটি ২১ লাখ মানুষ নিয়োজিত ছিলো। এ সংখ্যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ কোটি ২২ লাখ ছিলো। এই সংখ্যা ২০১৬-১৭ অর্থবছর মাত্র দুই লাখ বেড়ে ১ কোটি ২৪ লাখ হয়েছে। অন্যদিকে সেবা খাতে ২০১৬-১৭ অর্থবছর ২ কোটি ৩৭ লাখ মানুষ নিয়োজিত ছিলো। সে হিসাবে একবছরের ব্যবধানে সেবা খাতে নতুন কর্মসংস্থান ১৭ লাখ বেড়েছে।
কর্মসংস্থানের এই পরিবর্তনের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী ইত্তেফাককে বলেন, সেবা খাতে কর্মসংস্থানের বিষয়গুলো অর্থনীতির জন্য টেকসই নয়। সুষম উন্নয়নের জন্য শিল্পখাতে কর্মসংস্থান বাড়ানো প্রয়োজন। বাংলাদেশে এমনিতেই প্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান তুলনামূলক কম। এই তথ্য প্রমাণ করে কর্মসংস্থানের সিংহ ভাগ সেবাখাত নির্ভর। এজন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর তাগিদ দেন তিনি। সেইসাথে বেসরকারি খাতে শ্রমের মূল্যায়নও নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী একবছরের ব্যবধানে দেশে কৃষিতে কর্মসংস্থান কমেছে ২ দশমিক ৮ ভাগ। শিল্প খাতে বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৮ ভাগ এবং সেবাখাতে বৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ ভাগ। বিগত এক বছরে নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে ১৩ লাখ। তবে এসময়ে দেশে অপ্রতিষ্ঠানিক খাত হতে প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমশক্তির রূপান্তর হয়েছে অনেক। বিশেষ করে দেশে গৃহস্থলী কাজে বিনা বেতনে কর্মে নিয়োজিতদের সংখ্যা কমে আসছে। অধিকহারে নারীরা ‘আন পেইড’ থেকে ‘পেইড’ কর্মসংস্থানে আসছে। বিবিএস এর হিসাবে আনপেইড ফ্যামিলি হেলপার সংখ্যা এক বছরের ব্যবধানে ১৪ লাখ কমে ৭২ লাখে নেমে এসেছে। আগের অর্থবছর এই সংখ্যা ছিলো ৮৬ লাখ। এ ক্ষেত্রে পুরুষদের ক্ষেত্রে ৭.৬ শতাংশ কমলেও নারীদের ক্ষেত্রে ১৮.৯ শতাংশ কমেছে। বিবিএস এর হিসাবে দেশে বেকার জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়ে ২৭ লাখে দাঁড়িয়েছে। শতাংশের হিসাবে এটি ৪.২ ভাগ। কর্মসংস্থান নতুন বৃদ্ধির হার ২ দশমিক ২ ভাগ। তবে পুরুষের ক্ষেত্রে এটি শুন্য দশমিক ৭ ভাগ এবং নারীদের বৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৮ ভাগ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ