উচ্চশিক্ষিত বেকার মানে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পর্যায় শেষে কাঙ্ক্ষিত চাকরি না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়ানো এক স্বপ্নবিলাসী তরুণ দল, যাদের হাহাকার শোনার মতো কোনো জনপ্রতিনিধি নেই, কষ্ট প্রচার করার কোনো মিডিয়া নেই, ভরসা দিবে এমন কোনো শক্তি নেই, সমাজে যাদের বিশেষ কোনো স্থান নেই। একদিকে ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা অন্যদিকে চাকরি ক্ষেত্রের স্বল্পতা বিষিয়ে তুলছে বেকারদের জীবন। তার উপর বোঝা হয়ে আছে মাত্রাতিরিক্ত কোটা ব্যবস্থার যন্ত্রণা, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিশাপ, লবিং নামক বিষাক্ত ছোবল, চাকরি পরীক্ষার দীর্ঘসূত্রীতা ইত্যাদি। সমাজ, পরিবার, রাষ্ট্রের বোঝা হিসেবে নিজেকে মেনে নিতে না পেরে অনেকেই আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। বাংলাদেশের নীতি নির্ধারকরা এত পরিকল্পনা-পলিসি প্রণয়ন করে থাকেন, কিন্তু কাউকেই দেখিনি উচ্চশিক্ষিত বেকারদের দুর্দশা লাঘবে কোনো ইতিবাচক কথা বলতে বা ফলপ্রসূ পরিকল্পনা করতে। যদি সুষ্ঠু পরিকল্পনা হতো তাহলে সরকারি চাকরিতে আবেদনের ফি পদভেদে ৫০০/১০০০ টাকা হতো না, এত বেকারের স্বপ্ন সমূলে উত্পাটিত হতো না। বেকার মানেই কি সবক্ষেত্রে বোঝা, কদর্য, মূল্যহীন? তাহলে এত পড়াশুনার মূল্য কোথায়! জীবনে ১৮-২০ বছর পড়াশুনা করে শুধু একটি চাকরির অভাবে একজন শিক্ষার্থীর জীর্ণদশার দায়ভার রাষ্ট্রের উপরও বর্তায়। দেশের নীতি নির্ধারকরা সব ধরনের জঞ্জাল অপসারণ করে বেকারদের নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে তাদের প্রাপ্য সম্মান ফিরিয়ে দিয়ে যথাযোগ্য চাকরির ব্যবস্থা করলে একদিকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি পাবে সোনার বাংলা, অপরদিকে উন্নত দেশে যাত্রার যে ধারা অব্যাহত রয়েছে তাতে আরো নতুন মাত্রা যুক্ত হবে ।