কাছাড় জেলার শিলকুড়ি এলাকার বাসিন্দা নিরঞ্জন সূত্রধর। তার পরিবারের সদস্য ছয় জন। চারজনের নাম আজ তিনি খুঁজে পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক তালিকার চূড়ান্ত খসড়ায়। সেখানে এক ছেলে আর তার নিজের নামও নেই।
নিরঞ্জন সূত্রধর বলেন, ‘এটা কীভাবে সম্ভব যে বাবা বা স্বামী হিসাবে আমি বৈধ নাগরিক হলাম না, অথচ স্ত্রী, কন্যা আর এক পুত্রের নাম নাগরিক পঞ্জিতে উঠল! আবার এক ছেলের নাম আছে, অন্যজন বাদ!’
অনেকটা একই কাহিনী পাশের জেলা হাইলাকান্দির বন্দুকমারা এলাকার বাসিন্দা মিনারা বেগমের। তিনি বলেন, ‘আমার শ্বশুর আর বাবার দুজনেরই নামই ছিল ১৯৫১ সালের নাগরিক পঞ্জিতে। বাকি যা কাগজ দরকার, সব দিয়েছিলাম। কিন্তু সাতজনের পরিবারের তিনজনের নাম এসেছে, বাকি চারজনের নাম নেই। এক মেয়ের আর এক ছেলের নাম নেই, আমার নিজের নামও নেই। কিন্তু অন্য ছেলে মেয়েদের নাম রয়েছে।’
যদিও কর্তৃপক্ষ বলছে, যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এখনই অবৈধ বিদেশি বলে চিহ্নিত করা হচ্ছে না, তারা নিজেদের দাবির স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করার জন্যে আরও একবার সুযোগ পাবেন।
বাঁশধার গ্রামের উরজ্জ্ব রায় বলেন, পরিবারের ১৩ জন নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন, কিন্তু ২ জনের নাম সেই তালিকায় আসেনি। কেন যে দু’জনের নাম বাদ গেল, সেটাই তো বুঝতে পারছি না। একই নথি জমা দিলাম সবার জন্য, একজনের নাম থাকে, অন্যজনের নাম থাকে না!
আসামের সম্পূর্ণ খসড়া তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ৪০ লাখ ৭ হাজার ৭০৮ জনের নাম। যেসব মানুষের নাম বাদ পড়েছে, তাদের বেশিরভাগই বাংলাভাষী মুসলমান বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এ নিয়ে নির্দিষ্ট তথ্য এখনও দেওয়া হয় নি। এছাড়া বাদ পড়েছে অনেক বাঙালী হিন্দুর নামও।
সরকার বলছে, যাদের নাম বাদ পড়ছে, তাদের চিন্তার কোন কারণ নেই। একমাসের মধ্যে তথ্য নথিসহ আবারও দাবি পেশ করা যাবে। আর যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের এখনই অবৈধ বিদেশি বলে চিহ্নিতও করা হবে না বা বন্দী শিবিরে পাঠানো হবে না। বিবিসি।