আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তাইওয়ান প্রণালীর স্পর্শকাতর মধ্যবর্তী সীমান্তরেখা অতিক্রম করে তাইওয়ানের আকাশসীমায় চীনের অন্তত ৭১টি সামরিক বিমান প্রবেশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের সাথে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইন-ওয়েনের বৈঠকে ক্ষুব্ধ চীন শনিবার সামরিক মহড়া থেকে সীমান্তরেখা লঙ্ঘন করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে সাই ইন-ওয়েনের ফেরার একদিন পর তাইওয়ান প্রণালীতে তিন দিনের সামরিক মহড়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার কেভিন ম্যাককার্থির সাথে লস অ্যাঞ্জেলসে সাইয়ের বৈঠকের তীব্র নিন্দা জানায় বেইজিং।
গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মনে করে চীন। বেইজিং শেষ পর্যন্ত বেয়ারা এই প্রদেশ চীনের সঙ্গে একীভূত হবে বলেও বিশ্বাস করে। আর সেটি করতে প্রয়োজনে বলপ্রয়োগও করা হতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরে হুঁশিয়ার করে আসছে চীন।
কিন্তু তাইওয়ানের অনেকেই স্বশাসিত এই দ্বীপ ভূখণ্ডকে আলাদা রাষ্ট্র মনে করেন। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এই অঞ্চলের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়নি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ওয়াশিংটন এবং বেইজিংয়ের বিবাদের আরেকটি কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে তাইওয়ান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ইস্যুতে কূটনৈতিক তৎপরতাও ব্যাপক জোরদার করেছে।
তাইপে-বেইজিং সংকটে ওয়াশিংটনের দীর্ঘদিনের নীতি রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে, চীন যদি কখনও তাইওয়ানে আক্রমণ চালায় তাহলে সেখানে সামরিক হস্তক্ষেপ করবে ওয়াশিংটন।
চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে তাইওয়ান প্রণালীর আশপাশে ‘জয়েন্ট সোর্ড’ সামরিক মহড়া শুরু করেছে। এই মহড়া তাইওয়ান প্রণালীর উত্তর, দক্ষিণ এবং পূর্ব প্রান্তজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে।
এক বিবৃতিতে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় থিয়েটার কমান্ড বলেছে, এই মহড়া তাইওয়ানের স্বাধীনতাকামী বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী ও বহিরাগত শক্তির যোগসাজশ এবং উসকানিদাতাদের জন্য গুরুতর সতর্কতা। জাতীয় সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪ টার দিকে বলেছে, এখন পর্যন্ত ৭১টি চীনা বিমান তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করছে। এসব বিমানের মধ্যে যুদ্ধবিমান, বোমারু বিমান ও ৯টি চীনা রণতরীও রয়েছে।
তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা সাধারণত দুই পক্ষের মাঝে অনানুষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা হিসাবে কাজ করে। কিন্তু চীন প্রায়ই এই মধ্যরেখা অতিক্রম করে তাইওয়ানের আকাশসীমায় যুদ্ধবিমান কিংবা সামরিক বিমানের অনুপ্রবেশ ঘটায়।