বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির প্রপার্টি ক্রয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করতে যাচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের টিম গঠন করেছে।
সোমবার দুদকের সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫৯ বাংলাদেশি দুবাইয়ে ৯৭২টি প্রপার্টি ক্রয় করেছেন বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে। এর পর একটি পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে এই বাংলাদেশি ব্যক্তিরা কারা তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে একটি সম্পূরক আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।
গত ১১ জানুযারি তিনি ‘দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির হাজার প্রপার্টি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে অনুসন্ধানের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে সম্পূরক আবেদনটি দায়ের করেন।
১৬ জানুয়ারি আবেদনের শুনানি নিয়ে এ বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুবাইয়ে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৪৫৯ বাংলাদেশির মালিকানায় থাকা মোট ৯৭২টি প্রপার্টির কাগজে-কলমে মূল্য হতে পারে সাড়ে ৩১ কোটি ডলার। তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে-গোপনে বিপুল পরিমাণ মূলধন স্থানান্তরিত হচ্ছে দুবাইয়ে। এ অর্থ পুনর্বিনিয়োগে ফুলে ফেঁপে উঠছে দুবাইয়ের আর্থিক, ভূসম্পত্তি, আবাসনসহ (রিয়েল এস্টেট) বিভিন্ন খাত।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সি৪এডিএস) সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে প্রপার্টি কিনেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি।
বৈশ্বিক অর্থনীতির অস্থিরতার মধ্যেও দুবাইয়ে রিয়েল এস্টেট খাতের বিদেশি প্রপার্টি ক্রেতাদের মধ্যে বাংলাদেশিরা ছিল শীর্ষে। আরব আমিরাতের স্থানীয় ভূমি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, করোনাকালে দুবাইয়ে বাংলাদেশি ধনীরাই সবচেয়ে বেশি প্রপার্টি কিনেছেন। এমনকি নেদারল্যান্ডস, সুইজারল্যান্ড, চীন ও জার্মানির মতো দেশগুলোর ধনী নাগরিকদেরও তারা পেছনে ফেলে দিয়েছে।