• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৯ অপরাহ্ন

মস্কোর দাবি না মানলে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তির মেয়াদ বাড়াবে না।

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩

যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে খাদ্যপণ্য রপ্তানি প্রথমে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে মারাত্মক সংকট দেখা দিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত গত জুলাই মাসে তুরস্ক ও জাতিসংঘের উদ্যোগে মস্কো ইউক্রেন থেকে কৃষ্ণ সাগরে জাহাজের মাধ্যমে কৃষিপণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে এক বোঝাপড়া মেনে নেয়। তবে নীতিগতভাবে তিন বছর মেয়াদের সেই চুক্তির বাস্তব মেয়াদ কম রেখে রাশিয়া বার বার আন্তর্জাতিক বিশ্বের উপর চাপ সৃষ্টি করার হাতিয়ার হাতছাড়া করেনি। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য ও সার রপ্তানি সংক্রান্ত আনুষাঙ্গিক এক চুক্তি সম্পর্কে নিজস্ব মনোভাবের ভিত্তিতে নিজের হাতে রাশ রাখতে চাইছে মস্কো।

নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবার ক্ষোভ প্রকাশ করে বললেন, যে রাশিয়া থেকে খাদ্যশস্য ও সার রপ্তানি সুগম করতে জাতিসংঘের সঙ্গে চুক্তির ‘কার্যত কোনো ফল’ মস্কো দেখতে পাচ্ছে না। তিনি এমন অচলাবস্থার জন্য পশ্চিমা বিশ্বকে দায়ী করেন। সেই বাধা দূর করতে মস্কোর দাবি না মানলে রাশিয়াও ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি চুক্তির বোঝাপড়ার মেয়াদ বাড়াবে না। উল্লেখ্য, ১৮ই মে সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে।

পশ্চিমা বিশ্ব রাশিয়ার উপর দফায় দফায় নানা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে গেলেও খাদ্যশস্য ও সারের ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো বাধা সৃষ্টি করে নি। তবে মস্কোর অভিযোগ, আর্থিক লেনদেন, লজিস্টিক্স ও বিমার ক্ষেত্রে পশ্চিমা বিশ্বের নিষেধাজ্ঞার কারণে বাস্তবে খাদ্যশস্য ও সার রপ্তানির ক্ষেত্রে নানা বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। কৃষির জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও আমদানি করা যাচ্ছে না। সেই অচলাবস্থা কাটাতে রাশিয়ার দাবির তালিকায় অন্যতম প্রধান বিষয় রাশিয়ার কৃষি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক ‘সুইফট’ কাঠামোয় ফিরিয়ে আনার ছাড়পত্র। জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেশ সে বিষয়ে কোনো আশ্বাস না দিয়ে এক পালটা প্রস্তাব রেখেছেন। তাঁর মতে, রাশিয়ার কৃষি ব্যাংকের লেনদেনের ক্ষেত্রে মার্কিন ব্যাংকগুলি সহায়তা করতে পারে। লাভরভ এমন এককালীন সমাধানসূত্র সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করেন।

জাতিসংঘের মহাসচিব সোমবার লাভরভ-কে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনের উদ্দেশ্যে লেখা একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। তাতে ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির কাঠামোর উন্নতি, মেয়াদ-বৃদ্ধি ও সম্প্রসারণ সম্পর্কে প্রস্তাবের রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। মঙ্গলবার লাভরভ বলেন, প্রেসিডেন্ট পুটিন সেই চিঠি না পড়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির সিংহভাগই আপাতত রাশিয়ার কৌশলগত সহযোগী চীনের কাছে গেলেও সে বিষয়ে বেইজিং-এর সঙ্গে মস্কোর কোনো কথা হয় নি।

শুধু সমুদ্রপথে নয়, স্থলপথেও ইউক্রেনের খাদ্যশস্য রপ্তানির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতিবেশী ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ অপেক্ষাকৃত সস্তার সেই কৃষিপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে। তবে এবার ইইউ-র কৃষির দায়িত্বপ্রাপ্ত শীর্ষ কর্মকর্তা সেই অচলাবস্থা কাটানোর বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন। শুধু বহির্বিশ্বে রপ্তানির জন্য নির্দিষ্ট খাদ্যশস্যের ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকবে না বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ