• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী সতর্কতা দিয়েছেন সরকার আগামী ১ জুন থেকে নগদ অর্থের সংকটে পড়বে।

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২ মে, ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জানেত ইয়েলেন সতর্কতা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার হয়ত আগামী ১ জুন থেকে নগদ অর্থের সংকটে পড়বে। এ সমস্যা উত্তরণে ঋণ সীমা বাড়ানো বা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এ ব্যাপারে কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে সোমবার (১ মে) একটি চিঠিও পাঠিয়েছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী।

মঙ্গলবার (২ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশগুলোর মতো যুক্তরাষ্ট্রেও ঋণ সীমা নির্ধারণ করা আছে। এর বাইরে দেশটির সরকার ঋণ দিতে বা নিতে পারে না। তবে বর্তমান মার্কিন প্রশাসনের ঋণের পরিমাণ ওই সীমার কাছে চলে এসেছে।

ঋণ সীমার কাছে পৌঁছে যাওয়া মানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার কয়েকদিন পর আর কোনো ঋণ নিতে পারবে না।

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার নিম্নকক্ষ কংগ্রেসের সদস্যদের উদ্দেশ্যে পাঠানো চিঠিতে অর্থমন্ত্রী এই সমস্যা সমাধানে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত সময়ের মধ্যে বর্তমানে ঋণ সীমা ৩১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন থেকে বাড়ানো বা এ সীমা বাতিল করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ৯ মে এ নিয়ে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬০ সাল থেকে ঋণ সীমা মোট ৭৮ বার বাড়ানো বা কমানো হয়েছে।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টি। বাইডেন প্রশাসন ঋণ সীমা বাড়ানোর বিষয়টি জানানোর পর রিপাবলিকানরা দাবি করেছে, বাইডেনের অর্থনেতিক নীতিতে পরিবর্তন আনতে হবে এবং অনেক খাতে ব্যয় সংকোচন করতে হবে। যার মধ্যে শিক্ষার্থীদের ঋণ মওকুফ এবং পরিবেশ বান্ধব ঋণের বিষয়টি রয়েছে। এসব দাবি মেনে নিলে তারা ঋণ সীমা বৃদ্ধির অনুমোদন দেবে বলে জানিয়েছে।

কিন্তু বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি রিপাবলিকানদের এমন দাবির তীব্র সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্ট নিজে বলেছেন, এ নিয়ে কোনো আলোচনা বা আপস করা হবেনা।

তবে ইউসএস চেম্বার অব কমার্সসহ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের বড় সংগঠনগুলো রিপাবলিকানদের দাবির ব্যাপারে আলোচনা করার জন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে ইতোমধ্যে চাপ প্রয়োগ করেছেন।

যদি মার্কিন সরকার সত্যি সত্যি নগদ অর্থের সংকটে পড়ে যায় তাহলে এর প্রভাব অনেক বড় হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র কখনো এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়নি।

কিন্তু যদি এবার হয়— তাহলে দেশটিতে অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। অনেক মানুষ চাকরি হারাবেন। যা দেশকে মন্দার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

এছাড়া যদি ঋণ সীমা বৃদ্ধি না করা হয়, তাহলে অর্থ নিতে না পারার কারণে সরকার সাধারণ সরকারি কর্মচারী, সামরিক বাহিনীর সদস্যদের বেতন দিতে পারবে না। সামাজিকখাতে নিয়োগকৃত কর্মচারী এবং সামরিক যন্ত্রাংশ সরবরাহকারীদের পাওনা অর্থ দিতে পারবে না।

এর প্রভাব এতই বেশি হবে যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ আবহাওয়ার সংবাদ দেওয়া এবং নেওয়ার বিষয়টিও বাধাগ্রস্ত হবে। কারণ জাতীয় আবহাওয়া সেবা দেওয়া হয় ফেডারেল সরকারের অর্থায়নে।

কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে অর্থমন্ত্রী জানেত ইয়েলেন জানিয়েছেন, আগের বিভিন্ন অভিজ্ঞতা থেকে প্রাপ্ত শিক্ষা অনুযায়ী ঋণ সীমা বাড়ানোর বিষয়টির জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা ঝুঁকিপূর্ণ, অপেক্ষা করলে বিষয়টি ব্যবসা ও সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ফলে এর আগেই এটির সমাধান করতে হবে।

তবে তিনি আবার জানিয়েছেন, ঠিক কখন মার্কিন সরকার অর্থ সংকটে পড়বে এটি নিশ্চিত করে তারা বলতে পারছেন না।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় ঋণের পরিমাণ জুনের মধ্যে ৭২৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে চাইছে। প্রাথমিক অবস্থায় যে ধারণা করা হয়েছিল এটি তার চেয়ে ৪৪৯ বিলিয়ন ডলার বেশি।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রত্যাশার চেয়ে কম ট্যাক্স পাওয়া, সরকারের উচ্চ ব্যয় এবং কোয়ার্টার ক্যাশ ব্যালেন্স শুরুর কারণে এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ