পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর ফলে ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।
বুধবার (৩ মে) দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আর্মি ইন অ্যাসোসিয়েশন উইথ বিআরটিসি, বুয়েটকে মেয়াদ ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ব্যয় বাড়ানোর ফলে এ খাতের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪২ কোটি ২৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। মেয়াদ বাড়ানোর কারণেই এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।
এদিকে গত ৪ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মাসেতু পার হয় ট্রেন। প্রথম যে ট্রেনটি পদ্মা সেতু পার হয়, তার ইঞ্জিন আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেটি টেনে নিয়ে গেছে চীন থেকে আনা সাতটি কোচ। ইঞ্জিন ও কোচ ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রান্ত থেকে রওয়ানা হয় দুপুর ১টা ২১ মিনিটে। এরপর প্রথম স্টেশন মালিগ্রামসংলগ্ন বগাইলে পৌঁছায় ১টা ৪১ মিনিটে।
ট্রেনটি গড়ে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার বেগে চলে। ২টা ১০ মিনিটে শিবচরের পদ্মা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ২টা ৪০ মিনিটে পদ্মা সেতুতে ওঠে। পদ্মা সেতু পার হতে ১৬ মিনিট লাগে ট্রেনের। সব মিলিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া স্টেশন—এই ৪২ কিলোমিটার রেলপথে আসতে ট্রেনের সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এর আগে ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে ফিতা কেটে পরীক্ষামূলকভাবে বিশেষ এ ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
পরীক্ষামূলক উদ্বোধনের দিন রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশের বেশি। আর পুরো প্রকল্পকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার অংশে আগামী সেপ্টেম্বর যাত্রীবাহী রেল চলাচলের আশা করছেন তিনি।
আগামী বছরের জুনে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল চলাচল করবে। লেভেল ক্রসিংবিহীন এই রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল স্টেশনসহ নতুন ১৪টি স্টেশন নির্মাণ এবং পুরোনো ছয়টি স্টেশন উন্নয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে।