বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে এলএসডি (লাম্পি স্কিন ডিজিজ) রোগে গরু মরতে শুরু করেছে। ছোঁয়াচে এ চর্মরোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। গত এক মাসে উপজেলার ১২০টি খামারে মধ্যে ৩০টি খামারে রোগটি ছড়িয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১৩৫ টি গরু। ওষুধ সংকটে দিন দিন গরু মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েইে চলছে। এই মুহূর্তে ১০ হাজার ডোজ গোটপক্স ভ্যাক্সিনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু গত ৩ মাসে এখানে সরবরাহ করা হয়েছে মাত্র ৫০ ডোজ ভ্যাক্সিন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশে এ রোগের কোন ওষুধ নেই। তবে, গোট পক্স বা ছাগলের পক্স রোগের ওষুধ গরুর শরীরে প্রয়োগ করে গরু বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। সে ওষুধেরও সরবরাহ নেই বললেই চলে। ফলে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে গরুর মালিক, কৃষক ও খামার মালিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় এ উপজেলায় গবাদি পশু রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার। এর মধ্যে গরুর সংখ্যা ৭৫-৮০ হাজার। ছাগল রয়েছে প্রায় ৪০ হাজার। ছাগলের পক্স রোগের প্রতিষেধক ভ্যাক্সিন ‘ভাইরাক্স’ এর সাথে আরও কিছু ওষুধ প্রয়োগ করে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ থেকে গরু বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। পল্লীমঙ্গল গ্রামের সুজন হালদার বলেন, তার দুটি গরু আক্রান্ত হয়েছে কিন্তু ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে পারেননি। অনেক খামারি এভাবে ওষুধ সংকটে ভুগছেন।
এ সম্পর্কে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. ইউনুছ আলী বলেন, ভাইরাসজনিত চর্ম রোগ (এলএসডি) মশা, মাছি থেকে বেশি ছাড়াচ্ছে। আক্রান্ত গরুর সংস্পর্শে থাকলেও অন্য গরু আক্রান্ত হবে। এ রোগের কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। আপাতত ছাগলের পক্স রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত ‘ভাইরাক্স’ ওষুধটি গরুর এই চর্ম রোগের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। বৃষ্টি না থাকায় এবং অতিরিক্ত গরমে এ রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে।
ডা. ইউনুছ আলী আরও বলেন, মোরেলগঞ্জে এখন ৪৫ শতাংশ বা প্রায় ৩৫ হাজার গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত হবার ২-১ দিনের মধ্যেই চিকিৎসা শুরু করতে না পারলে গরু মারা যাবার সম্ভাবনা বেশি। এ রোগের চিকিৎসার জন্য মোরেলগঞ্জে এই মুহূর্তে ১০ হাজার ডোজ গোটপক্স ভ্যাক্সিনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সরবরাহ নেই। গত ৩ মাসে এখানে দেওয়া হয়েছে মাত্র ৫০ ডোজ।