উৎপাদন ঠিক রাখতে কৃমিল্লার শ্রীকাইল গ্যাসফিল্ডে বসানো হচ্ছে ওয়েলহেড কম্প্রেসার। খনিতে উৎপাদন ধীরে ধীরে কমে আসতে থাকায় খনির কূপের মুখে ওয়েল হেড কম্প্রেসার বসানো হচ্ছে। সম্প্রতি জ্বালানি নিরাপত্তা দিবসের অনুষ্ঠানেও জানানো হয়েছে, ইতোমধ্যে তিনটি ওয়েলহেড কম্প্রেসার বসানো হয়েছে।
গ্যাস কূপের উৎপাদন যখন একেবারে কমে যায় তখন অবশিষ্ট গ্যাস তুলতে এই ওয়েলহেড কম্প্রেসার বসানো হয়, যাতে ওপর থেকে প্রেশার বা চাপ দিলে গ্যাস উঠে আসে। খনির আয়ুষ্কালের একেবারে শেষে এই কম্প্রেসার বসানো হয়।
বাপেক্স ২০০৪ সালে প্রথম শ্রীকাইলে গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। তখন ত্রুটিপূর্ণ খননের কারণে গ্যাস মেলেনি। পরে ২০১২ সালে পুনরায় কূপ খনন করে এখানে গ্যাস পাওয়া যায়। সেই হিসেবে মাত্র ১২ বছরের ব্যবধানেই শ্রীকাইলে কম্প্রেসার বসানো হচ্ছে। এটি একটি খনির জন্য খুব অল্প সময়।
অভিযোগ রয়েছে, বিদেশি কোম্পানি তাল্লোকে (তাল্লো অয়েল ইউরোপের অন্যতম তেল-গ্যাস অনুসন্ধানকারী কোম্পানি) বাঙ্গুরা গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাস তুলতে দেওয়ার জন্যই শ্রীকাইল ২০০৪ থেকে ১২ পর্যন্ত ফেলে রাখা হয়েছিল। তাল্লোর বাঙ্গুরা এবং শ্রীকাইল একই স্ট্রাকচারে। এখানে পাশাপাশি দুটি খনি হওয়ায় বাপেক্স ঠিক সময়ে গ্যাস তুলতে ব্যর্থ হওয়ায় অন্য কোম্পানিটি গ্যাস তুলে ফেলেছে।
জানা গেছে, গত বছর জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটির (পিপিসি) পঞ্চম সভায় (প্রকল্প প্রস্তাব) ডিপিপি সংশোধন করে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। ডিপিপি সংশোধনের জন্য আরডিপিপি প্রস্তুত করে ২৩ আগস্ট ২০২২ তারিখে বাপেক্সের পরিচালনা পর্ষদের ৪৫৬তম সভায় এটি অনুমোদন হয়। সংশোধিত ডিপিপি গত ২৬ সেপ্টেম্বর পেট্রোবাংলা থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও এটি অনুমোদন পায়নি।
বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শোয়েব বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এই প্রকল্পের ডিপিপি সংশোধন করা হচ্ছে। এরপর আমরা অ্যাওয়ার্ড দেবো। আমরা খুব দ্রুত কাজটি শুরু করতে চাই। তিনি বলেন, প্রেশার কমে যাওয়ার কারণে এখনই ১০ মিলিয়নের মতো আমরা কম গ্যাস সরবরাহ করছি। কম্প্রেসার বসালে এই চাপ তো বাড়বেই। ভবিষ্যতেও গ্যাসের চাপ বেশি আসবে বলে আমরা আশা করছি।
জানা গেছে, শ্রীকাইলে বাপেক্স তিনটি কূপ খনন করেছে। এখান থেকে দৈনিক ৪০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার কথা থাকলেও এখন মিলছে ৩০ মিলিয়ন ঘনফুট। দৈনিক ১০ মিলিয়ন ঘনফুট উৎপাদনে কমেছে শ্রীকাইলে।