চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা কমিয়ে এনেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নতুন এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই অর্থবছর জিডিপি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হতে পারে। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে ঝুঁকি হিসাবে বলা হয়েছে, নির্বাচনী অর্থবছর হওয়া অনিশ্চয়তা রয়েছে, মুদ্রার বিনিময় হার, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে জিনিসপত্রের দামে বাজারে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি রয়েছে। সেই সঙ্গে চার ধরনের প্রধান চ্যালেঞ্জ রয়েছে দেশের অর্থনীতিতে। সেগুলো হলো- আন্তর্জাতিক চাপ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, আর্থিক খাতের ভঙ্গুরতা এবং অনিশ্চয়তা। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে প্রবৃদ্ধি বাড়তে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছর বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ। এছাড়া ভারতের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ছয় দশমিক তিন শতাংশ। একই সঙ্গে ভুটানের চার শতাংশ, নেপালের তিন দশমিক ৯ শতাংশ এবং পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি হতে পারে এক দশমিক সাত শতাংশ।
২০১৬-২০২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য হারে দারিদ্র কমেছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, দারিদ্র্যের হার প্রতিবছর এক দশমিক তিন শতাংশ পয়েন্ট হারে কমেছে। চরম দারিদ্র্যের হার কমেছে শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ পয়েন্ট হারে। বাংলাদেশ শিশুমৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, বিদ্যুৎ সুবিধা, স্যানিটেশন ও শিক্ষাসহ সুস্থতার অন্য বিষয়গুলোতে ভালো করেছে।
এতে আরও বলা হয়, গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্যের হার ২৯ দশমিক এক শতাংশ থেকে ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশ কমেছে। এছাড়া শহর এলাকায় ১৯ দশমিক চার শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ১৪ দশমিক সাত শতাংশ। দেশে নবায়ন ত্বরান্বিত হচ্ছে। তবে ব্যাপক বৈষম্য বেড়েছে। উচ্চ নগরায়নের ফলে বৈষম্যকে বাড়িয়ে দিচ্ছে।
কম আমদানির ফলে রাজস্ব আদায়ও কম হচ্ছে। দুর্বল রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি আনুমানিক পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ হয়েছে। বাণিজ্য সম্পর্কিত এবং আয়কর আদায় কম হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, চার কারণে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। অভ্যন্তরীণ জ্বালানির মূল্য বেড়ে যাওয়া, দুর্বল মুদ্রানীতি, টাকার অবমূল্যায়ন ও বৈদেশিক মুদ্রা কমে যাওয়ায় আমদানি কমে যাওয়া।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক। এছাড়াও চিফ ইকোনমিস্ট বানার্ড হ্যাভেন, ইকোনমিস্ট নাজমুস সাদাত খান এবং যোগাযোগ বিভাগের প্রধান মেহেরিন এ মাহবুব উপস্থিত ছিলেন।