বর্তমানে দেশে প্রায় এক কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছে। ডায়াবেটিসে ভোগা রোগীর সংখ্যায় বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সকালে ‘আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি এবং করণীয় জানুন’ বিষয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটি। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন হলে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটি।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ এন্ড্রোক্রাইন সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম বলেন, ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। বর্তমানে দেশে প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে ভুগছেন এবং সারা বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। আগামী চার বছরে এ সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। সে হিসেবে দেশের চারটি অসংক্রমণ রোগের মধ্যে অন্যতম এ ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ২০২৫ সালের মধ্যে দেড় কোটি ছাড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ এন্ডোক্রাইন সোসাইটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও বারডেম হাসপাতালের পরিচালক (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. মো. ফারুক পাঠান, সভাপতি (নির্বাচিত) অধ্যাপক মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান, সহ-সভাপতি ও বারডেম হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারিয়া আফসানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও এভারকেয়ার হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আহসানুল হক আমিন, দপ্তর সম্পাদক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ডা. মারুফা মোস্তারী।
দেশবরেণ্য এসব বিশিষ্ট চিকিৎসকরা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ডায়াবেটিসপ্রবণ দেশ এবং বাস্তব পরিস্থিতি এর চেয়েও গুরুতর। বর্তমানে শহর ও গ্রামে প্রায় সমানভাবে বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিসের রোগী। তাই গুরুতর অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে এখনই এটি প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।
তারা আরও বলেন, এখনই ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। সর্বস্তরের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা এবং ডায়াবেটিক রোগীর সেবায় সুলভে ওষুধ সরবরাহ থেকে শুরু করে অন্যান্য সহযোগী ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে করণীয় সম্পর্কে তারা বলেন, দেশের ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ রোগী জানেই না তারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কারণ বেশিরভাগ রোগী নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করান না। তাই ডায়াবেটিস থাকুক বা না থাকুক সবাইকেই বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা জরুরি। পাশাপাশি খাবারে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে আমিষ ও শাক-সবজি জাতীয় খাবার বাড়ানো উচিত। এছাড়া স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ, ফাস্টফুডসহ ক্ষতিকর খাবার পরিহার, নিয়মিত হাঁটা, খেলাধুলা করা প্রয়োজন। কেউ যদি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসা নেওয়া উচিত।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সরকারিভাবে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান এসব চিকিৎসক।