• রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৫ অপরাহ্ন

তফসিল ঘোষণার পর তৎপরতা বেড়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর,

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

বহুল প্রত্যাশিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ঘোষণা হয়েছে। আর এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে তৎপর হয়ে উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীসহ সারা দেশে তাদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য ঢাকায় বিজিবি ও র‍্যাব ছাড়াও সাদা পোশাকের সদস্যরা মাঠে কাজ করছেন।

বুধবার তফসিল ঘোষণা করা হবে এমন তথ্য পাওয়ার পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নির্বাচন কমিশনের সামনে টহল দিতে শুরু করেন। সেখানে মোতায়েন করা হয়েছিল বিজিবি সদস্যরা। আরও ছিল আনসার ও পুলিশ, র‍্যাব এবং সাদা পোশাকে গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। মূলত এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যাতে কোন ধরনের নাশকতা অথবা অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এজন্যই এই ব্যবস্থা।

সকাল থেকে জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভবনের আশপাশে ব্যাপক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তার মাঝেই তফসিল ঘোষণার বিষয়টি আসে। এই তফসিল ঘোষণার বিষয়টিকে সরকার দিলেও নেতা কর্মীরা স্বাগত জানান। তারা জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা ছাড়াও মোহাম্মদপুর এলাকায় মিছিল করেছে। কিন্তু এতে অনেকটাই নাখোশ বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলো।

দিনভর রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা ডিউটি করেছেন। তাদের পাশাপাশি ছিল আনসার সদস্যরাও। তবে বুধবার দিনব্যাপী কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোন বাস বা যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনাও ছিল শূন্য। যদিও তার আগে মঙ্গলবার রাতে মিরপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে একই সাথে চারটি বাস পোড়ানো হয়েছে। তবে একটি ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য ও মিলেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট ছাড়াও জাতীয় সংসদ, মন্ত্রী পাড়া এবং রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ভবন গুলোতে কড়া পাহারা বসানো হয়। তবে বুধবার রাত হওয়ার সাথে সাথে রাজধানীর সড়কগুলো যানবাহন শূন্য হয়ে পড়ায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছিল।

রাজধানীতে গত ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু করে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার বিরোধী মতে নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে তাদের বলা হচ্ছে তারা সকলে বিভিন্ন স্থানে নাশকতার মামলার আসামি। আর মামলা হয়েছে ১৫৩ টি। যেগুলোর অধিকাংশের আসামি করা হয়েছে বিএনপি ও জামাতের নেতা কর্মীদের। গেল ১৫ দিনে রাজধানীসহ সারা দেশে শতাধিক যানবাহন পড়ানো হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে দুজনের। আগুনে পুড়েছে কয়েকজন।

এসব ঘটনার কারণে তফসিল ঘোষণার প্রভাব পড়তে শুরু করে দিনের শেষ দিকে গিয়ে। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে গণপরিবহন কমতে থাকে। বাড়তে থাকে মানুষের ভোগান্তি। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকা সিটিতে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলো সংখ্যা খুব কম ছিল। আর সেগুলো ছিল যাত্রীতে পরিপূর্ণ। তবে সবার মাঝে ছিল উৎকণ্ঠা আর ভয়।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, তফসিল ঘোষণার পর পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে হয়তো আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ একে কেন্দ্র করে গণপরিববনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটতে পারে। যদিও সারাদিন এমন কোন ঘটনা ঘটেনি।

তফসিল ঘোষণার পরপরই বিএনপি হরতাল ডেকেছে। হরতালের ঘোষণা আসার পর থেকেই ঢাকা শহরে বাসের সংখ্যা কমতে শুরু করে বিকেল থেকে। ঢাকায় আজকে বাস কম চলাচল করার এটা অন্যতম কারণ মনে করছেন অনেকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন তৎপরতায় নিরাপত্তার জোরদার হলেও জনমনে নানা শঙ্কা। যদিও তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে কোনো সংঘাতের আশঙ্কা দেখছেন না ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, রাজধানীবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সজাগ রয়েছে।

অন্যদিকে বুধবার সকাল থেকে পোশাক কারখানার নিরাপত্তা জোরদারে ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ৩৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৮১ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে।

পাশাপাশি তফসিল ঘোষণার পরপরই ঢাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে র‍্যাবের ৬০ টি টহল টিম মাঠে নেমেছে। তারা কাজ করছেন বলে জানিয়েছে র্যাবের মিডিয়া বিভাগ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, নাশকতা দমনে ডিএমপি পুলিশ তার আইনগত সক্ষমতার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে সব ধরনের প্রস্তুতি আমরা গ্রহণ করেছি। আমরা আশা করছি আমাদের এই সকল ব্যবস্থার মাধ্যমে খুব দ্রুত সমস্ত নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ