শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক একটি খুবই প্রচলিত চিকিৎসা। তবে তা ক্রমশ অকার্যকর হয়ে উঠছে। শিশুরা যখন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে কানে সমস্যা, সেপসিস বা মেনিনজাইটিসে ভোগে, তখন তাদের প্রায়ই অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এসব অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা ৫০ ভাগ কমে গেছে।
এই অ্যান্টিবায়োটিক মূলত রোগ প্রতিরোধের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর কার্যকারিতা কমে যাওয়ার অর্থ ব্যাকটেরিয়াগুলোর ভেতর উল্টা এসব অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠছে। অথচ এর বিকল্প হিসেবে এখনো নতুন ও কার্যকর চিকিৎসা তৈরি হয়নি।
অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা শিশুদের জন্য খুবই জরুরি। যতক্ষণ না তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুরোপুরি বিকশিত হয়, ততক্ষণ তারা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে কম সক্ষম।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ রোধে দ্রুত কাজ করে। এগুলো ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত কার্যকর হয় এবং ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ও প্রজননকে বাধা দিতে পারে বা ব্যাকটেরিয়া কোষগুলোকে মেরে ফেলতে পারে।
যেমন শিশুদের ক্ষেত্রে কানের সমস্যা খুব দেখা যায়। কানের মধ্যে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটলে মিউকাস মেমব্রেন ফুলে যায়, বিশেষ করে শ্রবণ নলের ভেতরে যা গলার দিকে যায়। যেহেতু এই টিউবগুলো বাধাগ্রস্ত হয় এবং শ্লেষ্মা আর নিষ্কাশন করতে সক্ষম হয় না, তাই কানের পর্দায় চাপ তৈরি হয়, যা ছোট বাচ্চাদের জন্য খুব বেদনাদায়ক হতে পারে। অ্যান্টিবায়োটিক দ্রুত তা রোধ করতে পারে।
বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে, বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো নির্ভরযোগ্য বিকল্প নেই। কখনো কখনো সহযোগী হিসেবে ঘরোয়া পদ্ধতি কাজে লাগে। যেমন, স্যালাইন কখনো কখনো শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ উপশম করতে সাহায্য করতে পারে, অথবা মোজার ভেতর পেঁয়াজ রেখে ঘুমানো কানের সংক্রমণ রোধে খুব পুরোনো প্রতিকার।
তবে মূল কথা হলো, অ্যান্টিবায়োটিক এখনো সেরা ও সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সমাধান। যেমন, সেপসিস বা রক্তে বিষক্রিয়ার ক্ষেত্রে সাথে সাথে অ্যান্টিবায়োটিকের চিকিৎসা করা উচিত।
সূত্র : ডয়চে ভেলে