রাজধানীর বাজারে গরুর প্রতি কেজি মাংস এখন ৭৫০ টাকা। সরকারের বেঁধে দেওয়া দাম মানছেন না বিক্রেতারা।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মিরপুর ও মোহাম্মদপুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
কারওয়ান বাজারে দেখা গেছে, গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। বাজারে একজন ক্রেতা ঢুকলেই একাধিক বিক্রেতা হাক-ডাক শুরু করে দিচ্ছেন। বেশি মাংস নিলে কেজিতে ১০ টাকা কমে বিক্রি করবেন বলেও কানে কানে প্রস্তাব দিচ্ছেন।
সরকার গরুর মাংসের দাম ৭০০ টাকা বেঁধে দিয়েছে, বেশি দাম বলছেন কেন, এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে মাংস বিক্রেতারা মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে।
মিরপুরের সুপার শপে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে একদর ৭৫০ টাকায়। একই দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে অন্যান্য বাজারে।
সরকারের বেঁধে দেওয়া ৭০০ টাকার বেশি কেন নেবেন – প্রশ্নের জবাবে মিরপুরের এক সুপার শপের বিক্রেতা পাল্টা প্রশ্ন করেন, সেই সরকার কি আছে? কেন, সরকার তো আছে;
জবাবে ওই বিক্রেতা বলেন, ওইটা তো নির্বাচনের আগের কথা। নির্বাচন শেষ৷ মাংসের দাম নিয়ে বাজার মনিটারিং শেষ।
দুই মাস আগে ৬৫০ টাকা কেজি দরে মাংস বিক্রি হয়েছিল রাজধানীতেই। এমন কি হলো আবারও দাম ৭৫০ টাকায় তুললেন?
জবাবে মাংসবিক্রেতা বলেন, ৭৫০ টাকা নিচে বিক্রি করলে তো লাভ থাকে না। লাভ ছাড়া কীভাবে ব্যবসা করব!
উজ্জ্বল ও খলিল এখনও ৬৩০ টাকায় বিক্রি করছেন প্রসঙ্গ তুললেই জবাবে এই মাংসবিক্রেতা বলেন, গরুর দাম বেড়েছে। এ জন্য মাংসের দাম বাড়বে। কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না।
এবার শবে বরাতেও মাংসের দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেল না। বিষয়টি নিয়ে মিরপুরের এক মাংস ক্রেতা বলেন, অনেকে ক্রেতা উজ্জ্বল ও খলিলের কাছে থেকে কম দামে বেশি করে মাংস নিয়ে আসছে। এসব বাজারে মাংসের দাম বেশি, আবার এদের ব্যবহারও খারাপ। যে কারণে এসব মার্কেটে ক্রেতা একটু কম।
মিরপুরের আরেক ক্রেতা আ. রহিম বলেন, এখন প্রতি কেজি গরুর মাংসের দাম ৭৫০ টাকা দেখছেন তো, অপেক্ষা করেন রোজার মধ্যেই দাম আগের দাম দেখতে পাবেন।
মিরপুরের বিভিন্ন মাংসের দোকানে বিক্রি হওয়া বর্তমান ও তিন মাস আগের দাম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, এসব দোকানদার কম মাংস বিক্রি করে বেশি লাভ করেছেন। একটি গরু জবাই করে দুই দোকানদার মিলে বিক্রি করেছেন এতে যে লাভই হয়েছে, সপ্তাহের বাকি কয়দিনে নতুন করে গরু জবাই না করেও এক গরুর মাংস থেকে প্রাপ্ত মুনাফা দিয়ে পুরো সপ্তাহ চলেছে। ভোক্তাকে ঠকিয়ে ঠকিয়ে নিজেরা লাভবান হচ্ছেন।
রাজধানীর উজ্জ্বল বা খলিল কম দামে বেশি মাংস বিক্রি করে এসব বিক্রেতাদের মনোপলি ব্যবসায় ভেঙে দিয়েছিলেন। তাই শবে বরাত উপলক্ষে গরুর মাংসের চাহিদা বাড়ার পরও মাংস বিক্রেতারা এবার নতুন করে দাম বাড়ানোর সাহস পায়নি।
মাংস ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বললে এমনটাই জানা গেছে।