যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রায় ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা নিজেদের প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (২৪ মে) জেনেভায় জাতিসংঘের সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার মুখপাত্র এলিজাবেথ থ্রোসেল উদ্দেশে এ কথা জানান।
তিনি জানান, অনেকেই হত্যার শিকার হয়েছেন। অনেকের বাড়িঘর, সম্পদ আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। থ্রোসেল বলেন, ‘‘সম্প্রতি বুথিডং ও মৌডং শহরে আরাকান আর্মি (এএ) এবং সেনাবাহিনীর লড়াইয়ে ১০ হাজার নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।”
এছাড়া অন্তত ৪৫ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী নাফ নদী এলাকায় পালিয়ে গেছেন। ২০২১ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি শেষে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি জান্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালাতে শুরু করে। এর ফলে তাদের মধ্যে ফের সংঘাত শুরু হয়।
আরকান আর্মি বলছে, রাখাইন রাজ্যে নৃগোষ্ঠী রাখাইনদের আরো স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে তারা যুদ্ধ করছে। এই রাজ্যে প্রায় ৬ লাখ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিমদেরও বসবাস।
২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে সামরিক জান্তা হত্যাযজ্ঞ শুরু করার পর হাজার হাজার রোহিঙ্গা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। বিষয়টি এখন জাতিসংঘ গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা করে।
এলিজাবেথ থ্রোসেল বলেন, ‘‘এক লাখের বেশি রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে বাংলাদেশে পালিয়ে গেছেন।” জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান ভোলকার তুর্ক বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘‘বিশ্বের প্রতি সংহতি জানিয়ে আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে তাদের যেন যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া হয়।”
থ্রোসেল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘‘রাখাইনে স্পষ্টত এখন চরমমাত্রায় সহিংসতা বিরাজ করছে।” তিনি এ সময় উল্লেখ করে বলেন, ‘‘মংডু শহরে জান্তা বাহিনীর একটি আউটপোস্ট রয়েছে। সেখানে আরাকান আর্মি ও জান্তা বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে। এ এলাকায় ব্যাপকসংখ্যক রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বসবাস।”
রাখাইনে নতুন করে যুদ্ধ শুরুর উল্লেখ করে থ্রোসেল বলেন, ‘‘এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে বেসামরিক মানুষ আরও একবার হত্যার শিকার,তাদের সম্পত্তি ধ্বংস ও লুটপাট করা হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তার দাবি উপেক্ষা করা হচ্ছে। তারা আবার যন্ত্রণার পুনরাবৃত্তিমূলক দুঃস্বপ্নে তাদের বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।”