• মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

নেতানিয়াহুর স্ত্রীর সামরিক অভ্যুত্থানের শঙ্কায়

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বুধবার, ২৬ জুন, ২০২৪

ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা আট মাসেরও বেশি সময় ধরে চালানো এই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। বর্বর এই আগ্রাসনের জেরে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ক্ষোভ।

এর সঙ্গে দিনে দিনে বাড়ছে গাজায় যুদ্ধ বন্ধে বৈশ্বিক চাপ। এমন অবস্থায় অভিযোগ উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে সরাতে ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তারা অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্র করছেন। আর এই অভিযোগ তুলেছেন নেতানিয়াহুর স্ত্রী।

মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টার জন্য দেশটির শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করেছেন।

গত সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় বন্দি থাকা ইসরায়েলিদের বেশ কয়েকটি পরিবারের সাথে বৈঠকের সময় এই অভিযোগ করা হয় বলে মঙ্গলবার হারেৎজ পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

ইসরায়েলি এই সংবাদপত্রে সারা নেতানিয়াহুকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বাহিনী আমার স্বামীর বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটাতে চাইছে।

এসময় কিছু পরিবারের সদস্যরা তাকে বাধা দেন। তারা পরামর্শ দেন, তিনি (সারা নেতানিয়াহু) ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীকে অবিশ্বাসের দাবি করতে পারেন না। আর তখন নেতানিয়াহুর স্ত্রী তার বক্তব্য স্পষ্ট করেন এবং বলেন, তার অবিশ্বাস শুধুমাত্র সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তাদের জন্য প্রযোজ্য, সম্পূর্ণরূপে আইডিএফের (সেনাবাহিনী) জন্য নয়।

এসময় তিনি একাধিকবার জোর দিয়ে বলেন, ‘সেনাবাহিনী একটি অভ্যুত্থান মঞ্চস্থ করতে চায়।

অবশ্য সারা নেতানিয়াহুই তার পরিবারের একমাত্র ব্যক্তি নন যিনি সামরিক নেতাদের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেছেন। তার ছেলে ইয়ার নেতানিয়াহুও চলতি মাসে একই ধরনের অভিযোগ করেছিলেন।

ইয়ার গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার সময় সামরিক এবং শিন বেট নিরাপত্তা পরিষেবাকে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ জন্য অভিযুক্ত করে। গত ১৭ জুন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে তিনি লেখেন, ‘তারা কি আড়াল করার চেষ্টা করছেন? যদি বিশ্বাসঘাতকতা না হয়, তাহলে কী ঘটেছে তা সামনে আনতে বহিরাগত ও স্বাধীন দলগুলোর তদন্তকে ভয় পায় কেন?

তিনি আরও বলেন, ‘কেন সেনাবাহিনী এবং গোয়েন্দা প্রধানরা দাবি করতে থাকেন যে হামাসকে নিবৃত্ত করা হয়েছে? ৭ অক্টোবর বিমান বাহিনী কোথায় ছিল?’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক ইসরায়েলি সামরিক, নিরাপত্তা, এবং রাজনৈতিক নেতারা গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ঠেকাতে ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণ করেছে। নেতানিয়াহু অবশ্য হামলার কোনো দায় স্বীকার করতে রাজি নন।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।

স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতে, গাজায় চলমান আগ্রাসনে প্রায় ৩৭ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া আরও ৮৬ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ এই বর্বর আগ্রাসনে আহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ