• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন, ২০২৪

সেমিফাইনালে এসে এমন একপেশে এক ম্যাচ দেখতে হবে কে ভেবেছিল। ক্রিকেট বিশ্বে প্রবাদের মতো করে প্রচলিত এক কথা, দক্ষিণ আফ্রিকার দৌড় সেমিফাইনাল পর্যন্ত। প্রতিটা বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ফেবারিট হিসেবেই নামে প্রোটিয়ারা। কিন্তু সেমিতে গিয়েই খেই হারানো স্বভাব তাদের। তার ওপর এবারে প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের বে সারপ্রাইজ প্যাকেজ আফগানিস্তান।

সাতবার সেমিফাইনাল হারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তান দারুণ এক লড়াই উপহার দিবে এমন প্রত্যাশা নিয়েই টিভিসেটের সামনে বসেছিলেন ক্রিকেট ভক্তরা। কিন্তু ঘটনা যা হলো তার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউই। ত্রিনিদাদের ব্রায়ান লারা স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকা এক কথায় উড়িয়েই দিয়েছে আফগানিস্তানকে।

লো-স্কোরিং ম্যাচে মার্কো জানসেন আর তাবরাইজ শামসিদের বোলিং তোপে আফগানিস্তান অলআউট হয়েছে মোটে ৫৬ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৫ রানের মাথায় কুইন্টন ডি কক আউট হলেও তাতে বিপদ বাড়েনি প্রোটিয়াদের। হেসেখেলেই নির্ধারিত লক্ষ্যে গিয়েছে তারা। ৯ উইকেটের এক জয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে গেল প্রোটিয়ারা।

লক্ষ্য কেবল ৫৭ রান। এমন অবস্থায় রান তাড়া করতে খুব একটা ঝুঁকি নেয়নি প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইনআপ। শুরুতে ডি কক ফিরে গিয়েছিলেন ফজলহক ফারুকির দারুণ এক ইনসুইং ডেলিভারিতে। ক্ষণিকের জন্য সেটা স্বস্তি দিয়েছিল রশিদ খানদের। এরপরেই এইডেন মার্করামকেও ফেরাতে পারত তারা। তবে মার্করামের ব্যাট ছুঁয়ে গুরবাজের হাতে বল জমা পড়লেও রিভিউ নেয়নি তারা।

আফগানিস্তান ম্যাচে সুযোগ পেয়েছে ওই পর্যন্তই। এরপর থেকে আর কোনোপ্রকার ভুল করেননি মার্করাম এবং রিজা হেন্ড্রিকস। দুজনের অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানের জুটি দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমবারের মতো তুলে দেয় যেকোনো বিশ্বকাপের ফাইনালে। নিজেদের ৮ম সেমিফাইনাল ম্যাচে এসে এমন সাফল্য পেল প্রোটিয়ারা। ৬৭ বল বাকি থাকতেই ফাইনাল নিশ্চিত করল তারা।

ম্যাচের ভাগ্যটা অবশ্য লেখা হয়ে গিয়েছিল আফগানিস্তানের প্রথম ইনিংসের পরেই। আরও স্পষ্ট করে বললে ইনিংসের প্রথম ৬ ওভারে। বিশ্বকাপের পুরোটা জুড়েই ছিল বোলারদের আধিপত্য। সেমিফাইনালে আরও একবার দেখা গেল তা। পাওয়ারপ্লেতেই আফগানিস্তান হারালো ৫ উইকেট। বিশ্বকাপে এর আগে এমন বিপর্যয় দেখেছিল কেবল উগান্ডা, পাপুয়া নিউগিনি এবং আয়ারল্যান্ড।

প্রথম ওভারে গুরবাজ, তৃতীয় ওভারে গুলবাদিন নাইবকে ফিরিয়ে ধ্বংসযজ্ঞের শুরু করেছিলেন মার্কো জানসেন। চতুর্থ ওভারে কাগিসো রাবাদা ফেরান মোহাম্মদ নবী আর ইব্রাহিম জাদরানকে। আফগানিস্তানের হারের শুরুটা হয়ে যায় সেখান থেকেই। পাওয়ারপ্লেতে আর কিছুই করা হয়নি তাদের। ১০ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাই ফিরলে একপ্রকার শেষই হয়ে আফগানিস্তানের ফাইনালের স্বপ্ন।

সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো হয়নি আফগানদের। ৫০ রানের মাথায় পতন ঘটে আরও ৩ উইকেটের। শেষ পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোরের লজ্জা নিয়ে মাত্র ৫৬ রানেই অলআউট হতে হয় আফগানিস্তানকে। পুরো বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা আফগানিস্তান নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ খেলতে এসেছিল আজ। আর সেখানেই দেখতে ক্রিকেটের নির্মমতার চিত্র।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ