• বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:১৭ পূর্বাহ্ন

অবিলম্বে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার জরুরি প্রয়োজন : স্টারমার

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বিরাজমান সংকটের দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপাকালে এমন কথা বলেন তিনি। ইসরায়েল অবশ্য ধ্বংসাত্মক এ যুদ্ধ থামাতে কোনো আগ্রহ দেখায়নি, যদিও এ পর্যন্ত ৩৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খবর আলজাজিরার।

কিয়ার স্টারমার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের প্রত্যাবর্তন এবং গাজায় অবস্থানরত বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তার পরিমাণ অবিলম্বে বাড়ানো উচিত।’

বিরোধী দলীয় নেতা থাকাকালে স্টারমারের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান না জানানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল। তিনি পার্লামেন্টে গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের বিরোধিতা করে জনসাধারণের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। এর কয়েক মাস পর ফেব্রুয়ারিতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানান তিনি। এ ছাড়াও লেবার পার্টির সাবেক প্রধান জেরেমি করবিনসহ দলটির কিছু ফিলিস্তিনপন্থি সদস্যকে নির্বাচনে মনোনয়ন না দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল তার বিরুদ্ধে। জেরেমি করবিনসহ কমপক্ষে পাঁচজন স্বতন্ত্র ফিলিস্তিনপন্থি প্রার্থী যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।

গত অক্টোবরে এলবিসি পডকাস্টে গাজায় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করার অধিকার ইসরায়েলের রয়েছে বলেন মন্তব্য করে স্টারমার ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন। পরে লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র স্টারমারের ওই ব্যক্তব্যকে ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার সম্পর্কিত একটি প্রশ্নের জবাব ছিল বলে ব্যাখ্যা করেন।

ব্রিটিশ সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী সংকটের দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী শর্তগুলো পূরণ করতে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে কার্যকরভাবে পরিচালনায় আর্থিক সংস্থান নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

স্টারমার নেতানিয়াহুকে আশ্বস্ত করে বলেন, ইসরায়েলের ক্ষতিকর হুমকি প্রতিরোধে সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে চায় যুক্তরাজ্য। স্টারমারের সঙ্গে ফোনালাপের পর নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয়নি। স্টারমার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ফোনালাপেও একই অগ্রাধিকারগুলো নিশ্চিতের আহ্বান জানান।

ডাউনিং স্ট্রিটের একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, ফিলিস্তিনের জন্য আন্তর্জাতিক বৈধতা নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শান্তি প্রক্রিয়ায় অবদান রাখায় তার দীর্ঘদিনের নীতি পরিবর্তিত হয়নি। এটি ফিলিস্তিনিদের অনস্বীকার্য অধিকার।

বার্তা সংস্থা ওয়াফার তথ্যমতে, মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে যুক্তরাজ্যের প্রতি জোর আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনকে ১৪০টিরও বেশি দেশ একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সম্প্রতি মে মাসের শেষের দিকে আয়ারল্যান্ড, স্পেন ও নরওয়ে সর্বশেষ ইউরোপীয় দেশ হিসেবে ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে।

জাতিসংঘ এবং বৈশ্বিক সহায়তা সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা উল্লেখযোগ্যভাবে সীমিত করছে, এর ফলে শিশুদের মাঝে ব্যাপক অপুষ্টি দেখা দিচ্ছে।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনালাপের সময় স্টারমার ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সীমান্ত উত্তেজনা নিয়েও আলোচনা করেছেন। কারণ, যেকোনো মুহূর্তে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহ মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হতে পারে।

স্টারমার বলেন, ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক ছিল এবং সব পক্ষ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করায় আপাতত যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব হচ্ছে।

গাজায় চলমান সংঘাতে ৩৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। ৮৭ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে এবং হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ