ল্যাটিন আমেরিকান ফুটবলের সেরা আসর কোপা আমেরিকার ফাইনালে আগামীকাল সোমবার (১৫ জুলাই) ভোরে মুখোমুখি হচ্ছে কলম্বিয়া-আর্জেন্টিনা। এবার কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হতে পারলে সর্বশেষ তিন বছরে মেসিদের ঝুলিতে চারটি শিরোপা জমা হবে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে এই শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানাবেন আলবিসেলেস্তে তারকা আনহেল ডি মারিয়া। অধিনায়ক লিওনেল মেসিরও এটাই শেষ কি না, সেই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে দিয়েছেন পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বার্তা।
চলতি কোপার শুরুতে কিছুটা অস্বস্তিতে ছিলেন মেসি, নিজের চিরচেনা রূপও দেখাতে পারেননি। পরে তার সঙ্গে যুক্ত হয় পায়ের মাংসপেশির চোট। যা তাকে একটি ম্যাচে খেলতে দেয়নি। তবে ফাইনালের আগেই আর্জেন্টাইনদের জন্য সুখবর যে মেসি এখন পুরোপুরি ফিট, যার ঝলক তিনি সেমিফাইনালেও দেখিয়েছেন। এভাবে জয়ের ধারা যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মও ধরে রাখতে পারে সেলক্ষ্যে মেসি বলছেন, ‘আমি আশা করি এই প্রজন্ম জয়ের ব্যাপারে কখনও আশা হারাবে না এবং প্রতিযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
স্বদেশি সংবাদমাধ্যম ডি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্জেন্টিনা মহাতারকা এবারের কোপায় নিজের জার্নি ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে, ‘কানাডার বিপক্ষে আমি শারীরিকভাবে খুবই ভালো অনুভব করেছি। এর আগে চিলির বিপক্ষে কিছুটা অস্বস্তি ছিল এবং সে কারণে ঠিকভাবে খেলতে পারিনি। আমার গতি কমে গিয়েছিল, যা আমাকে সামনে এগোনোর ক্ষেত্রে বিরক্ত করেছে। ইনজুরি কাটিয়ে উঠলেও, আমার সবকিছু যে ঠিকঠাক হয়নি সেটাই মাথায় গেঁথে আছে। শেষ ম্যাচে আমি ভয়হীন খেলেছি, আমি ভালো বোধ করছি এবং আশা করি ফাইনালেও এমনই থাকবে।’
এটাই শেষ ফাইনাল কি না এমন প্রশ্নে মেসি বলছেন, ‘এই মুহূর্তে এটা নিয়ে আমি ভাবছি না। আমি উপভোগের মন্ত্র নিয়ে আছি। কী ঘটছে, কী অর্জন করছি, এসব আমি দিন ধরে ধরে ভাবছি। জাতীয় দলের সঙ্গে আমার দুর্দান্ত সময় কেটেছে, আবার খারাপ সময়ও কেটেছে। এখন শুধু উপভোগের মধ্যে থাকতে চাই। যতক্ষণ না মনে হবে যে আমার আর কিছু করার নেই, ততক্ষণ পর্যন্ত এভাবেই চালিয়ে যাব।’
এরপরই নিজের সতীর্থদের প্রাণখোলা প্রশংসায় ভাসিয়েছেন এলএমটেন, ‘আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতার তীব্রতা অনেক, অনুশীলনেও নিজেদের সর্বোচ্চটা দেওয়ার তাড়না থাকে। যারাই এই দলের হয়ে খেলছে, একইভাবে তারা পারফর্ম করছে। প্রতিটি ম্যাচেই আমাদের প্রতিযোগী মানসিকতাটা দেখা যায়। আমরা ভালো খেলি কিংবা খারাপ, কিন্তু এই দলটার মানসিকতা অন্যরকম, তারা যে কারও সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারে।’
এরপরই পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মেসির বার্তা, ‘এটি খুবই তরুণ প্রজন্ম এবং তারা (কোপা) আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। তাদের বেশিরভাগই ২৩, ২৪ কিংবা ২৫ বছর বয়সের। এখনও জাতীয় দলের হয়ে দেওয়ার জন্য পুরো ক্যারিয়ার আছে তাদের। আমি আশা করি তারা এই জয় ও প্রতিযোগিতাপূর্ণ মানসিকতা ধরে রাখবে। একইভাবে আবার এই বার্তা ছড়িয়ে দেবে যারা তাদের পরবর্তীতে খেলতে আসবে। আমার জন্য মৌলিক বিষয় আমি দারুণ এক দল পেয়েছি, যেখান থেকে অর্জন আসবেই আসবে।’