ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনী একটি ‘নিরাপদ এলাকায়’ হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফকে হত্যার জন্য শনিবার এই হামলা চালানো হয়েছে।
ইসরায়েলি আর্মি রেডিও এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকাকে নিরাপদ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেই একটি বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন মোহাম্মদ দেইফ। তবে হামলায় তিনি নিহত হয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করা যায়নি।
মোহাম্মদ দেইফকে গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মনে করা হয়। ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন তিনি। এর আগে সাতবার তাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু কোনবারই সফলতা পায়নি ইসরায়েল।
হামাসে যোগ দেওয়ার পর ৩০ বছরে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন মোহাম্মদ দেইফ। শেষ পর্যন্ত তিনি সামরিক প্রধানের দায়িত্ব পান। গাজায় হামাসের বিস্তৃত সুড়ঙ্গ গড়ে তোলার পেছনে তার হাত রয়েছে। আত্মঘাতী বোমা হামলায় অনেক ইসরায়েলির মৃত্যুর জন্য দেইফকে দায়ী করা হয়।
আজকের হামলার পর ঘটনাস্থলের একটি ভিডিও চিত্র হাতে এসেছে রয়টার্সের। তাতে দেখা যায়, ধোঁয়া ও ধুলায় ঢেকে গেছে আল-মাওয়াসি এলাকা। সেদিকে ছুটে যাচ্ছে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স। প্রাণ বাঁচাতে সেখান থেকে ছুটে পালাচ্ছেন নারী, শিশুসহ বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, আজকের হামলায় অন্তত ৯০ জন নিহত এবং আহত ৩০০ জন। ঘটনাস্থল থেকে এক নারী কাঁদতে কাঁদতে রয়টার্সকে বলেন, সবাই মারা গেছে। আমার পরিবারে আর কেউ বেঁচে নেই। আমাদের সন্তানগুলোর শরীর টুকরা টুকরা হয়েছে। ওদের (ইসরায়েল) লজ্জা হওয়া উচিত।
আজকের হামলার মধ্য দিয়ে ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনে মোট ৩৮ হাজার ৫০০ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ৮৮ হাজার ৫২০ জন। এই হতাহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। সূত্র : আল জাজিরা