ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল কেন্দ্র করে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে ‘বিতর্কিত’ দাবি করে ফলাফলের প্রতিবাদে দেশটির হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে নেমেছে। বিভিন্ন স্লোগান নিয়ে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবন ‘মিরাফ্লোরেসে’র দিকে এগোচ্ছেন।
সোমবার (২৯ জুলাই) বিক্ষোভকারীরা ফ্যালকন রাজ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পূর্বসূরি হুগো শ্যাভেজের একটি মূর্তি ভেঙে ফেলার পরপরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ লিখতে থাকে, ‘স্বৈরাচারের পতন চাই’।
দেশটির রাজধানী কারাকাসের অন্যতম দরিদ্র অংশ পেটারে এলাকায় বিক্ষোভকারীরা মাদুরোর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন। সেসময় কিছু মুখোশধারী যুবক বর্তমান প্রেসিডেন্টের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন। অনেকে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘পড়ে যাচ্ছে, পড়ে যাচ্ছে। এই সরকারের পতন হতে চলেছে’।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীজুড়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ছোড়েন। এমনকি, মাদুরোপন্থি আধাসামরিক গোষ্ঠীগুলোও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার ভেনেজুয়েলার জাতীয় নির্বাচন পরিষদ (সিএনই) আনুষ্ঠানিকভাবে মাদুরোর জয় নিশ্চিত করে। সিএনই মূলত মাদুরোর অনুগতদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এবারের নির্বাচনে ৩০ হাজার ভোটকেন্দ্রের সবকটি থেকে ট্যালি প্রকাশ করেনি। মূলত এর ফলেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিরোধীদের দাবি, তারা ভোট গণনার যে তথ্য সংগ্রহ করেছেন, তাতে দেখা গেছে যে অ্যাডমুন্ড গনজালেস মাদুরোকে পরাজিত করছেন। সোমবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনে বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো দাবি করেছেন, তার জোট ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে। একটি অনলাইন ডাটাবেজে এ তথ্য তালিকাভুক্তও করা হয়েছে।
এদিকে, তৃতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট হওয়া নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ভেনেজুয়েলায় একটি অভ্যুত্থান চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই ‘সিনেমা’ সম্পর্কে এবং এবার কোনো দুর্বলতা থাকবে না। ভেনেজুয়েলার আইনকে সম্মান করা হবে।
রোববার (২৮ জুলাই) সমাজতান্ত্রিক শাসনের পঁচিশ বছরে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে ভোট দেন ভেনেজুয়েলার নাগরিকরা। সেদিন মধ্যরাতেই ‘মাদুরো নিয়ন্ত্রিত’ নির্বাচন পরিষদ বিতর্কিত ফলাফল ঘোষণা করে। তাতে দেখানো হয়, মাদুরো ৫১ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হয়েছেন। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডমুন্ড গনজালেস পেয়েছেন ৪৪ শতাংশ ভোট।