যুক্তরাজের মার্সিসাইড জেলার সাউথপোর্ট শহরে শিশুদের নাচের কর্মশালায় ছুরি হামলা এবং এতে ৩ শিশু নিহত হওয়ায় ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে রাজধানী লন্ডনে। পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ইতোমধ্যে শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে।
এছাড়া গত তিন দিনের বিক্ষোভে আন্দোলনকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেল, বোতলে আহত হয়েছেন ৫০ জনেরও বেশি পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য। তাদের মধ্যে অন্তত ৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
গত সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে সাউথপোর্টের একটি নাচের কর্মশালায় ছুরি হাতে হামলা করে ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ। আকস্মিক এই হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় এলিস ডি’সিলভা আগুইয়ার (৯) এবং এলসি ডট স্ট্যানকম্ব (৭) নামের দুই শিশু। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যায় বেবি কিং (৬) নামে আরও এক শিশু। হামলাকারীকে বাধা দিতে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন দুই প্রাপ্তবয়স্ক। তাদের অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। এছাড়াও আহত হয়েছেন আরও ৭ জন।
হামলাকারী ওই তরুণকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তবে বয়স আঠারো বছরের কম হওয়ায় তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।
এই ঘটনা ঘটার পরের দিন মঙ্গলবার থেকে বিক্ষোভ শুরু হয় সাউথপোর্ট শহরে। বিক্ষোভের সময় সাউথপোর্টের একটি মসজিদ ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা, মসজিদের কাছাকাছি দোকানগুলোতেও লুটপাট চালায়। যুক্তরাজ্যের উগ্র ডানপন্থি রাজনৈতিক দল ইংলিশ ডিফেন্স লীগ ছিল এ বিক্ষোভের নেতৃত্বে।
এ সময় বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে সাউথপোর্টে আহত হন ৩৯ জন পুলিশ-কর্মকর্তা ও সদস্য। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিক্ষোভকারীদের সবাই সাউথপোর্টের বাসিন্দা নন। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সেখানে গিয়েছিলেন তারা। তবে মঙ্গলবার দিনব্যাপী বিক্ষোভ চলার পর সন্ধ্যার দিকে খানিকটা শান্ত হয় সাউথপোর্টের পরিস্থিতি।
কিন্তু তারপরের দিন পুলিশসূত্রে জানা গেছে, সাধারণ পর্যায়ে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়েছে যে হামলাকারী ওই তরুণ অবৈধ অভিবাসী। লন্ডনে বিক্ষোভের বিভিন্ন স্লোগান থেকেও তার আঁচ পাওয়া গেছে। বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন— “আমাদের শিশুদের বাঁচাও”, “আমরা আমাদের দেশ ফিরে পেতে চাই” প্রভৃতি।