পাকিস্তানে দেশজুড়ে ইন্টারনেটের গতি ব্যাপকভাবে কমে গেছে, এমনকি কোনো কোনো অঞ্চল ইন্টারনেট থেকেসম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও জানা গেছে। গতকাল বুধবার থেকে চলছে এই অবস্থা।
দেশটির ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থাগুলো এই সংকটের কোনো কারণ জানাতে পারেনি। সাংবাদিকরা ইন্টারনেট পরিষেবা সংক্রান্ত সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা পাকিস্তান টেলিকমিউনিকেশন অথরিটির (পিটিএ) সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন, কিন্তু পিটিএ থেকেও এ ইস্যুতে কোনো বক্তব্য-বিবৃতি পাওয়া যায়নি।
ব্রডব্যান্ড এবং মোবাইল ডেটা— উভয় ইন্টারনেট পরিষেবাতেই গতি কমে গেছে। ফলে সাধারণ গ্রাহকরা ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন গতকাল থেকে।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট নির্বাচনের সময়ে ইন্টারনেটের গতি কমিয়ে দিয়েছিল সরকার। সে সময় জাতীয় নিরাপত্তাকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ব্লক করে দিয়েছিল তৎকালীন সরকার। এখনও দেশটিতে এই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি ব্লক অবস্থায় রয়েছে। ভিপিএন ছাড়া এক্সের ওয়েবসাইটে ঢোকা সম্ভব নয়।
তবে এখন শুধু এক্স নয়, ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণে বুধবার থেকে ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং ইনস্টাগ্রামও ব্যবহার করতে পারছেন না নেটিজেনরা। অনেক নেটিজেন অভিযোগ করেছেন, যে কোনো পোস্ট আপলোড করতে অস্বাভাবিক বেশি সময় লাগছে।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের পাশাপাশি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন অনলাইন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরাও। ইন্টারনেট পরিষেবা সংস্থা এবং সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে ব্যাখা না করা হলেও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ‘ফায়ারওয়াল’ নামের একটি বিশেষ নিরাপত্তা সফটওয়্যারের ত্রুটিপূর্ণ ইনস্টলেশন কারণে ইন্টারনেটের গতির এই দুরাবস্থার জন্য দায়ী।
দেশজুড়ে ইন্টারনেট পরিষেবাকে আরও উন্নত ও নিরাপদ করতে গত জুলাই মাসের শেষ দিকে ‘ফায়ারওয়াল’ ইনস্টল করার ঘোষণা দেয় পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার। ইনস্টলেশনের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয় ১৪ আগস্টকে। ১৯৪৭ সালে এই দিনেই ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে স্বাধীনতা পেয়েছিল পাকিস্তান।
গত মাসে পিটিএ’র এক কর্মকর্তা বলেছিলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া সংবাদের জোয়ার ঠেকাতে ফায়ারওয়াল সফটওয়্যার চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের সরকার।