এবার জালিয়াতির অভিযোগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার হলেন একসময়ের চিত্রনায়িকা এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর নিপুণ আক্তার।
জানা যায়, নীতিবিরুদ্ধভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করে মনগড়া বিবৃতি দেওয়ার অভিযোগে গত রোববার (১৯ জানুয়ারি) কার্যনির্বাহী পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সদ্য বিদায়ী বছরের ১৬ জুলাই শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার করে কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে এক বিবৃতি প্রদান করেন নিপুণ আক্তার। সেখানে নিজেকে সাবেক সাধারণ সম্পাদক দাবি করেন তিনি। এমনকি পরদিন (১৭ জুলাই) নিজের ফেসবুক আইডিতেও সেটা পোস্ট করেন। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন সময়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। অনুমতি ছাড়া অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করায় মিশা-ডিপজল কমিটি ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই সমিতির ষষ্ঠ সভায় বিষয়টি উত্থাপিত হয়। যেখানে নিপুণকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিলেও নিপুণ তা তোয়াক্কাই করেননি। তাছাড়াও আন্দোলনের পূর্বে বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন ডিপজলকে নিয়ে গণমাধ্যমে ‘কুরুচিপূর্ণ’ মন্তব্য করার অভিযোগ আছে নিপুণের বিরুদ্ধে।
তাই স্বাভাবিকভাবেই গঠনতন্ত্র পরিপন্থি কাজ করায় নিপুণকে নোটিশ প্রদান করে কার্যনির্বাহী পরিষদ কিন্তু শেখ সেলিমের ঘনিষ্ট হওয়ায় কোনো চিঠিকেই গুরুত্ব দেয়নি নিপুণ। চিঠির উত্তর না দিয়েই চালিয়ে যান সকল বিতর্কিত কর্মকাণ্ড। অনৈতিকভাবে শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার এবং সাধারণ সা.সম্পাদককে নিয়ে বাজে মন্তব্য করার অভিযোগে শিল্পী সমিতি থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার হয়েছেন আওয়ামী দালাল এই নিপুণ আক্তার।
তবে এ প্রসঙ্গে গণমাধ্যমকে বিস্তারিত কিছু না বললেও বহিষ্কারের সত্যতা স্বীকার করেছেন শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ডি এ তায়েব। এ বিষয়ে নিপুণের প্রতিক্রিয়া জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এমনকি হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও ওপাশ থেকে কোন উত্তর আসেনি।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় স্যোশাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে তোপের মুখে পড়েছিলেন নিপুণ। মূলত তিনটি কারণে সমালোচনায় জড়ান তিনি।
প্রথমত, কোন পদে না থেকেও শিল্পী সমিতির প্যাড ব্যবহার। দ্বিতীয়ত, হুবহু টেলিভিশনের অভিনয়শিল্পী সংঘের বিবৃতি কপি এবং সহিংসতা ও নিহত হওয়ার মতো ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া।
এ বিষয়ে তৎকালীন সময়ে হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবুল ফজল পলাশ বলেন, নিপুণ আক্তার ক্ষমতায় না থেকেও অনৈতিকভাবে সমিতির প্যাড ব্যবহার করেছেন যা পেনাল কোড ক্রিমিনাল আইনের ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।