অতিপ্রবল’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিনত হলেও সুপার সাইক্লোনে রূপ নিচ্ছে না ‘মোখা’। বাতাসের গতিবেগ কমে যাওয়ায় ঘূর্ণিঝড়টি ‘সুপার সাইক্লোন’ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
শনিবার দুপুরে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঘূর্ণিঝড় নিয়ে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
ডা. মো. এনামুর রহমান জানান, ঘূর্ণিঝড়টির গতিপ্রকৃতিতে পরিবর্তন আসায় এটি সুপার সাইক্লোন হচ্ছে না বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর নিশ্চিত করেছে।
প্রতিমন্ত্রী এনামুর বলেন, ‘শনিবার সকাল থেকে বাতাসের গতিবেগ কমে এসেছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ লক্ষ করে কক্সবাজারকে ১০ নম্বর, চট্টগ্রাম এবং পায়রা বন্দরকে ৮ নম্বর এবং মোংলা বন্দরকে ৪ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে।’
তবে মোখার প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস হতে পারে শঙ্কা প্রকাশ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ছয় থেকে ৯ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এছাড়াও ভোলা ও বরগুনায় ৩ থেকে ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ কমে এখন ১৫০ থেকে ১৬০ হয়েছে। এখন এটাকে এখন অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী মোখা অতিপ্রবল ঘূর্নিঝড় বা ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোন। এর চেয়েও ভয়ানক রূপ নেওয়াসহ আরও কিছু বৈশিষ্ট্য ধারণ করলে তাকে সুপার সাইক্লোন বলা হয়ে থাকে।
এদিকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’। কক্সবাজারকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় মোখা উত্তর-উত্তরপূর্বে দিকে আগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
শনিবার দিবাগত রাত থেকে চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়ের আগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মুক্ত হতে রবিবার রাত পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জানা গেছে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় মোখার গতিবেগ বাড়তে শুরু করেছে। একই সঙ্গে এটি শক্তিশালী হচ্ছে। এটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮১৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৮৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৪৫ কি.মি দক্ষিণে অবস্থান করছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিমি, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭৫ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুদ্ধ রয়েছে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।