দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় একই রশিতে মা ও মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের বাবার পরিবারের দাবি, পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তবে শশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যায় মৃত্যুর কথা বলছেন।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার আংগারপাড়া ইউনিয়নের আরাজী যুগীর ঘোপা গ্রামের বেণুপাড়ায় নিহতের শয়নকক্ষ থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার হয়।
উদ্ধার হওয়া দুজন হলেন, উপজেলার ০৩ নম্বর আংগারপাড়া ইউনিয়নের আরাজী যুগীর ঘোপা গ্রামের বেণুপাড়া এলাকার বিজয় রায়ের ছেলে ভক্ত রায়ের স্ত্রী সুজাতা রায় (২৪) ও তার মেয়ে নীলাদ্রি রায় (৬)।
জানা গেছে, সংসারের কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন পড়াশোনা করেন সুজাতা রায়। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় নিহত ও তার মেয়ের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে তাদের ডাকতে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মা ও মেয়েকে দেখতে পেয়ে নিহতের জা স্বপ্না রায় পরিবারের বাকি লোকজনদের ডাকাডাকি করেন। পরে খবর পেয়ে থানা পুলিশ এসে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার ও সুরতহাল করেন। নিহতের শয়নকক্ষে একটি চিঠি পাওয়া গেছে সেখানে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুতে কেউ দায়ী নয়’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৮ সালে পার্বতীপুর উপজেলার বিলাইচন্ডী ইউনিয়নের বাঘাচড়া ঝাউপাড়ার অমিত্য রায়ের মেয়ের সাথে প্রস্তাবের মাধ্যমে ভক্ত রায়ের বিয়ে হয়। ভক্ত রায় পেশায় একদিন দর্জি। নিহত সুজাতা রায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের বাংলা বিভাগের ছাত্রী ও বৈবাহিক জীবনে তাদের ৬ বছর বয়সী একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
নিহতের চাচা সত্যম্বর রায় বলেন, ‘আমার ভাজতির বিয়ের পর থেকেই তাদের সংসারে ঝগড়াঝাটির কথা শুনছি। বুধবার সন্ধ্যায় আমাদেরকে খবর দেন সুজাতা মারা গেছে। কিন্তু আমরা সবাই এসে দেখি নিহতদের মরদেহ রেখে উধাও হয়েছেন ভক্ত রায়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবি জানান মৃত সুজাতার পরিবার।’
তবে এই সময় নিহতের শশুরবাড়ির লোকজন বাসায় না থাকায় ও মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে খানসামা থানার ভারপ্রাপ্ কর্মকর্তা (ওসি) নজমূল হক বলেন, ‘মা ও মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে পুলিশ তদন্ত করছে।’
তবে দুই পৃষ্ঠার এই চিঠির হাতের লেখা নিহতের কি না সেটা পরীক্ষা-নিরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি।