বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন চেয়ে আজ বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে আবেদন দাখিল করা হবে। সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আবেদন দেবেন তার আইনজীবীরা। পরে আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে উত্থাপন করা হবে।
এদিকে সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার দায়েরকৃত আপিল শুনানির জন্য হাইকোর্টের কার্যালিকায় রয়েছে। বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের আজকের দৈনন্দিন কার্যতালিকার ছয় নম্বর ক্রমিকে রয়েছে আপিলটি। কার্যতালিকায় বলা হয়েছে, আপিল গ্রহণের বিষয়ে আদেশের জন্য রাখা হলো। আপিল দাখিল করা হলেও আসামি পক্ষ থেকে এর কোন কপি রাষ্ট্রপক্ষ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবীদেরকে সরবরাহ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন দুদক কৌসুলি খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, দু:খজনক হলেও সত্যি আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও জামিন বা আপিলের মেমোর কোন কপি এখন পর্যন্ত পাইনি। তবে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, নিয়ম অনুযায়ী আপিলের কপি শাখায় দাখিল করা হয়েছে। বুধবার আদালত বন্ধ থাকায় আজ এফিডেভিট করে জামিনের আবেদন দাখিল করা হবে। আর এর পরেই বিবাদী পক্ষকে কপি দেয়া হবে।
মঙ্গলবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল দাখিল করেন খালেদা জিয়া। ৪৪টি আইনগত যুক্তি তুলে ধরে আপিলে সাজা স্থগিতের পাশাপাশি তাকে খালাস দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছে। চাওয়া হয়েছে জামিনও। আজ জামিনের মূল আবেদনটি দাখিল করা হবে। জামিন আবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া তিনবার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। বর্তমানে তিনি অসুস্থ। বয়স ও শারীরিক অবস্থা এবং সামাজিক অবস্থান বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাকে জামিন দিতে পারে। আবেদনে আরো বলা হয়েছে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার বিচার চলাকালে খালেদা জিয়া জামিনে ছিলেন। জামিনে থাকাবস্থায় তিনি এর কোন অপব্যবহার করেননি। ফলে তিনি জামিন পাওয়ার হকদার।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামিকে দেয়া সাজার পূর্ণাঙ্গ রায় সোমবার প্রকাশ করে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে বলা হয়, আসামিরা সরকারি এতিম তহবিলের টাকা আত্মসাত করতে একে অপরকে প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেছেন। এর মাধ্যমে মামলার সকল আসামির প্রত্যেকেই কোন না কোনভাবে লাভবান হয়েছেন। এর ফলে তারা রাষ্ট্রীয় অর্থনৈতিক অপরাধী হিসেবে গণ্য হবেন। আর অর্থনৈতিক দুর্নীতি রাষ্ট্রের অর্থনীতির স্বাভাবিক গতিকে ব্যহত করে। যার খারাপ প্রভাব সমাজের প্রতিটি স্তরে সংক্রমিত হয়। এ কারণে তাদেরকে সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হলো।