দেশে বিভিন্ন শ্রেণির শূন্য থাকা সরকারি আড়াই লাখ পদে দ্রুত নিয়োগ সম্পন্ন করার তাগিদ দেয়া হলো সচিব সভা থেকে। যদিও কর্মোপযোগী বেকারের সংখ্যা কমবেশি সাড়ে চার কোটি বলে জানা যায়। তবে অন্য হিসাবে চাকরি প্রত্যাশী যোগ্য বেকারের সংখ্যা ৫৬ লাখের মতো। অক্ষর জ্ঞানসম্পন্ন সকলকে ধরে সাড়ে চারকোটির হিসাব ধরা হয়। তবে বেকারের সংখ্যাধিক্যের পরেও আড়াই লাখ শূন্য পদে নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হয়। অবশ্য পদসমূহে নিয়োগ না করা বা করতে না পারার পেছনে ক্ষেত্রবিশেষ কোটা সংরক্ষণ, তদ্বিরের চাপ, নিয়োগ কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতার অপব্যবহারের ইচ্ছাকেও দায়ী করা হয়ে থাকে।
গতকাল রবিবার অনুষ্ঠিত সচিব সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সভাপতিত্ব করেন। সভায় সকল সচিব উপস্থিত ছিলেন। সভায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে শূন্য থাকা পদ পূরণের ওপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হয়। এ ছাড়া সচিবালয়ে কর্মকর্তাদের স্থান সংকুলানের বিকল্প ব্যবস্থা, উন্নয়ন কাজ দ্রুত সম্পন্ন করাসহ আইন-শৃঙ্খলার উন্নয়নে সচেষ্ট থাকার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বিবিএস-এর সর্বশেষ প্রকাশিত জরিপে দেখা যাচ্ছে— উচ্চ শিক্ষিতরা যে বেশি বেকার, তা দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আবেদন থেকেই বোঝা যায়। বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় উত্তীর্ণ তিন লাখ ১৫ হাজার বেকার রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করা শিক্ষিতদের মধ্যে বেকারের সংখ্যা পাঁচ লাখ ৭৪ হাজার। আট লাখ ৫৩ হাজার জন মাধ্যমিক পাস করেছে। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বেকার বসে আছে তিন লাখ ৯৯ হাজার। আর মোটেই শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই এমন বেকারের সংখ্যা চার লাখ ৩৯ হাজার। জরিপে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় পাস করা বেকারদের ৫৬ শতাংশ ছয় মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময় পর্যন্ত কাজ পাননি। কমপক্ষে ছয় মাস বেকার ৩৮ দশমিক ৫ শতাংশ লোক। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষিতদের ৪৭ শতাংশ ছয় মাস থেকে দুই বছরের বেশি বেকার থাকে। কমপক্ষে ছয় মাস বেকার থাকে ৪৫ শতাংশ লোক। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষিতদের অর্ধেকই ছয় মাস বেকার থাকে। ৩৫ শতাংশ লোক ছয় মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময় পর্যন্ত বেকার থাকে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপে দেখা গেছে, দেশে কাজ করতে আগ্রহী এমন ১০০ লোকের মধ্যে ৪ দশমিক ২ জন কাজ পাচ্ছেন না, অর্থাত্ বেকার। উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের বেলায় বেকারত্বের হার এর তিন গুণ। আবার এদের বড় অংশই দীর্ঘ সময় ধরে বেকার।