• সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:

নারীদের আত্মবিশ্বাস ও মর্যাদা নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৮ মার্চ, ২০১৮

অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জন নারীর জন্য অত্যন্ত জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারীদের আত্মবিশ্বাস এবং মর্যাদা নিয়ে চলে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখানে অর্থনৈতিক স্বাধীনতাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই মেয়েদেরকে বসে থাকলে চলবে না, নিজেদেরও কাজ করতে হবে, লেখাপড়া শিখতে হবে এবং নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
নারীর অধিকার সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুর দর্শন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নারীর অধিকার নিয়ে যতই শ্লোগান দেই, যতই বক্তব্য দেই অধিকার কিন্তু আর হেঁটে আসবে না। জাতির পিতা বলতেন- ‘একটা মেয়ে যদি নিজে অর্থ উপার্জন করতে পারে এবং তার হাতে যদি কিছু টাকা থাকে বা আঁচলে যদি কামাই করে ১০ টাকা বেঁধে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে সমাজে-সংসারে এমনিতেই তার অবস্থানটা হবে। কেউ অবহেলা করতে পারবে না।’
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন ইউএন রেসিডেন্ট কো-অর্ডিনেটর এবং ইউএন রিপ্রেজেন্টিটিভ ইন বাংলাদেশ মিয়া সেপো। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব নাসিমা বেগম অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যরা, সরকারের পদস্থ কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক, আমন্ত্রিত অতিথি, নারী উদ্যোক্তা এবং বিভিন্ন নারী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নারীর উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ প্রধানমন্ত্রী ৫ জন জয়িতার হাতে সম্মাননা পদক তুলে দেন। পদক প্রাপ্তরা হচ্ছেন- অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জনে ঢাকা বিভাগের দৃষ্টি, শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করায় খুলনা বিভাগের মোসাম্মাৎ নাছিমা খাতুন, সফল জননী ক্যাটাগরিতে চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির হলা ক্রা প্রু মারমা, নির্যাতনের বিভীষিকা পেছনে ফেলে নতুনভাবে জীবন শুরু করায় ঢাকা বিভাগের ফিরোজা খাতুন এবং সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রাখায় রাজশাহী বিভাগের আমেনা বেগম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের যে মেধা আছে সেটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে এবং একটা সমাজকে যদি গড়তে হয় যে সমাজে প্রায় অর্ধেকই নারী সেই অর্ধেক বাদ রেখে একটা সমাজ উন্নত হতে পারে না। সমাজকে উন্নয়ন করতে হলে নারী পুরুষ সবাইকেই সমানভাবে সুযোগ করে দিতে হবে। নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে এবং কর্মক্ষেত্রেই তাদের যে শক্তি ও মেধা সেটা যেন কাজে লাগে তার ব্যবস্থাও করতে হবে।
এই সময় প্রধানমন্ত্রী কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার পংক্তি ‘বিশ্বে যা কিছু সুন্দর চিরকল্যাণকর/ অর্ধেক তার আনিয়াছে নারী অর্ধেক তাঁর নর,’- উল্লেখ করে বলেন, নারীদের যদি আমরা সুযোগ করে না দেই তাহলে সেটা হবে না। এজন্য তার সরকার ’৯৬ সালে সরকার গঠনের পর ইউনিয়ন পরিষদে নারীদের জন্য ৩০ শতাংশ কোটা বরাদ্দ করেন যাতে তৃণমূল থেকেই নেতৃত্বটা উঠে আসে।
একটা সমাজে নারী-পুরুষ সকলে মিলে কাজ করতে পারলেই একটা দেশ এগিয়ে যাবে। আর যেলক্ষ্য আমরা স্থীর করেছি, জাতির পিতা আমাদের যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন তার সুফল প্রত্যেক ঘরে পৌঁছাতে হবে। আমাদের ছেলে-মেয়েরা লেখাপড়া শিখে বড় হবে এবং বিশ্বে মর্যাদা নিয়ে চলবে তারা যেন সমানভাবে চলতে পারে সেভাবেই তাদেরকে আমরা গড়ে তুলতে চাই।
শেখ হাসিনা বলেন, কাজেই সমাজে যদি নারী পড়ে থাকে তাহলে সেই সমাজ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। সেজন্যই নারীদের অধিকার সুরক্ষিত করে তাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া, কর্মক্ষেত্রসহ সর্বক্ষেত্রেই তাদের বিচরণ যাতে নিশ্চিত হয় সেটাই আমাদের লক্ষ্য আর সে কাজটাই আমরা করে অনেক দূর এগিয়ে গেছি।
তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশে যা পারে না, বাংলাদেশের মেয়েরা তা পারে সেটাও আমরা প্রমাণ করে দিয়েছি। কাজেই এটাই চাই আপনারা আমাদের বোনেরা একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে আত্মমর্যাদা নিয়ে চলবেন। তারপরেও পরিবারের প্রতি যে দায়িত্ব সেটাও যথাযথভাবে পালন করবেন। কারণ, কথাইতো আছে সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে, একথাটাও যেন আমরা ভুলে না যাই।  বাসস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ