ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম) সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আসছে বর্ষা ও ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের আগে জরুরি অর্থায়ন নিশ্চিত করা না হলে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো ‘অনিবার্য হুমকির’ মুখোমুখী হবে।
শুক্রবার আইওএম বলেছে, ‘দাতা সংস্থাগুলোকে আসছে বর্ষা ও ঘূর্ণিঝড় মৌসুমের আগে ভূমিধস ও অন্যান্য দুর্যোগ থেকে বাঁচাতে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে জীবন রক্ষাকারী ব্যবস্থা এবং ক্যাম্পের লোকদের জন্য খাদ্যের সংগ্রহ নিশ্চিত করতে হবে। এই অনিবার্য হুমকি মোকাবেলায় আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যে জরুরি অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।’
সংস্থা জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে গত আগস্ট থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ক্যাম্পগুলোর জন্য নতুন অর্থায়ন না হলে লাখ লাখ লোকের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা এবং মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের ব্যাপারে প্রাথমিক রিপোর্ট পেতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের একটি দল আজ বাংলাদেশে আসছে। এ সময়ই জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা আইওএম রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ব্যাপারে এই সতর্কতার কথা জানায়।
আইওএম জানায়, প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজার জেলায় ত্রিপলের নিচে বসবাস করছে। এসব ক্যাম্প পাহাড়ের ঢালে, গাছপালার মধ্যে উঁচুনিচু বালু মাটির ভূমিতে অবস্থিত। ভারি বৃষ্টিপাতে বন্যা ও ভূমিধসের মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে এমন প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার লোক চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে ২৫ হাজার লোক ভূমিধসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
এতে বলা হয়, আর্থিক সহযোগিতা না পেলে অন্যরাও ঝুঁকির মধ্যে পড়বে, তারাও বর্তমানে বিপদজনক অবস্থায় রয়েছে। রাস্তা না হলে জরুরি সহযোগিতা এবং মেডিকেল সেবা তাদের লাখ লাখ লোকের কাছে পৌঁছানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
ত্রিপলের মজুদ দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে আইওএম বলেছে, মে মাসের মাঝামাঝি সরবরাহ জরুরি সীমার নিচে নেমে যাবে। আরো মজুদের জন্য অর্থায়ন না হলে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলো নতুন আশ্রয় পাবে না এবং তাদের আবাসস্থল ক্ষতিগ্রস্ত অথবা ঝড়ে ধ্বংস হয়ে গেলে তাদের নতুন আশ্রয়ে পুনর্বাসন করা যাবে না।
জাতিসংঘের সংস্থাটি জানায়, আরো আর্থিক সহযোগিতা না পেলে পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন (ডব্লিউএএসএইচ) কার্যক্রম মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। ডব্লিউএএসএইচ প্রকল্প ছাড়া নিরাপদ পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় ধস নামবে। এতে ল্যাট্রিনগুলো উপচে পড়বে এবং হাজার হাজার উদ্বাস্তু পানিবাহিত রোগে সংক্রমিত হবে।
আইওএম ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের জন্য ১৮২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহযোগিতা চেয়েছে। বর্তমানে অর্থায়নের ঘাটতি ১৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সকল সংস্থার সম্মিলিত অংশগ্রহণে সাহায্য প্রদানে সংস্থাগুলো ৯৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়, তবে বর্তমান সাহায্য এর মাত্র ৯ শতাংশ। বাসস।