দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির মাধ্যম হিসেবে নারীকে ব্যবহার করে অবৈধ আয় ও সম্পদ গোপন করা হচ্ছে। নারী শুধুমাত্র সচেতনতার অভাবে বা দুর্নীতিমনষ্ক পারিবার প্রধানের নানাবিধ অনৈতিক চাপে সঠিকভাবে না জেনেই এ অপরাধের অংশীদার হয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘পারিবারিক সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীর সীমিত ক্ষমতা, প্রতিবাদ বা বিরুদ্ধচারণে সামাজিক বাধা-বিপত্তি, প্রতিবাদের অপর্যাপ্ত স্বাধীনতার ফলে বেশিরভাগ নারী এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে পারছেন না।’
‘দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অবৈধ আয় ও সম্পদের পারিবারিক দায়: নারীর ঝুঁকি ও করণীয়’ শীর্ষক ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনার বাংলাদেশ (টিআইবি) আয়োজিত মতবিনিময় সভায় আজ রবিবার অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
টিআইবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মনুজুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ। কার্যপত্র উপস্থাপন করেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার শাম্মী লায়লা ইসলাম।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিদ্যমান আইন ও সহায়ক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের আইনি সুরক্ষা বিষয়ে অবগত না হওয়ায় নারীরা ঝুঁকির মুখে পড়ছেন। এ ঝুঁকি মোকাবেলা ও সার্বিকভাবে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে নারীর ক্ষমতায়ন, সিদ্ধান্ত-গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অধিকতর অন্তর্ভুক্তি, বিষয়-ভিত্তিক সচেতনতা, গণমাধ্যমে প্রচারণা, বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা-বিতর্ক অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, ‘নারীর এ ঝুঁকি নিরসনে দুদক সক্রিয় রয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠানসহ সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।’
সভায় জানানো হয়, ২০০৭ সাল থেকে ২০১৮ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত দুদক কর্তৃক দায়েরকৃত ২৯টি মামলায় ২৯ জন নারীকে তাদের স্বামীর দুর্নীতির কাজে সহায়তা বা জ্ঞাত আয়-বহিঃর্ভূত সম্পদ অর্জন বা সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে অধঃস্তন আদালত থেকে কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত দুদক পরিচালিত স্বামীর অবৈধ সম্পদ স্ত্রীর নামে অর্জন সংক্রান্ত ১১৮টি অনুসন্ধান চালানো হয়। এক্ষেত্রে তদন্তাধীন মামলার সংখ্যা ৩০টি এবং চার্জশীটকৃত মামলার সংখ্যা ১৪টি। বাসস।