রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ বাঙালির চিন্তা-চেতনা ও মননের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছেন। তিনি বলেন, ‘বাঙালির সুখ-দুঃখ, আবেগ-ভালোবাসা, আশা-আকাঙ্ক্ষাসহ এমন কোনো অনুভূতি নেই যা রবীন্দ্রনাথ স্পর্শ করেননি।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
মো. আবদুল হামিদ বলেন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ বাংলা সাহিত্যের একজন দিকপাল, উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কালজয়ী লেখায় একদিকে ঋদ্ধ হয়েছে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য, অন্যদিকে তা বিশ্বসাহিত্যের অপরিহার্য উপাদানে পরিণত হয়েছে আপন বৈভব, আঙ্গিক, বহুমাত্রিকতা আর সর্বজনীনতায়।
তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ রচিত – ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ আমাদের জাতীয় সংগীত। এই গান জাতীয় ঐক্য ও সম্প্রীতির স্মারক। যে-কোনো দুর্যোগ-সংকটে ও আনন্দ-বেদনায় রবীন্দ্রনাথের সাহিত্যসম্ভার শক্তি ও সাহস জোগায়। তাঁর সাহিত্য পাঠে আমরা আনন্দিত হই, আন্দোলিত হই।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিরল প্রতিভার অধিকারী এই অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি কেবল আমাদের সৃজন-মনীষার প্রতীকে পরিণত হননি, তাঁর সৃষ্টিকর্ম বিশ্বের সব মানুষের কাছে আদৃত হয়েছে। তাঁর প্রজ্ঞা, দর্শন, সৃষ্টিশীলতা, উদার মনোভাব ও মানবতাবোধ বিশ্ববাসীর কাছে সুপরিচিত। তাঁর কাব্যপ্রতিভার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯১৩ সালে তিনি ভারতীয় উপমহাদেশে প্রথম নোবেল সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন।
তিনি বলেন, তাঁর এই অর্জনের মধ্য দিয়ে বিশ্বে নতুনভাবে বাঙালি জাতিসত্তার উন্মেষ ঘটে। তিনি বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে প্রতিষ্ঠিত করেছেন অনন্য উচ্চতায়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কবিগুরু ছিলেন একাধারে কথাসাহিত্যিক, কবি, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, ছড়াকার, দার্শনিক-চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, সংগীতজ্ঞ, বিজ্ঞানী, কৃষিবিদ, সমবায়ী, আলোকচিত্র ও চলচ্চিত্রপ্রেমী, মঞ্চ নকশাকার, চিত্রশিল্পী, পরিবেশবিদ এবং সমাজ সংস্কারক। আমি বিশ্বাস করি, রবীন্দ্রনাথের এই দ্যুতিময় উপস্থিতি আমাদের ব্যক্তিক, জাতীয়, সাংস্কৃতিক ও রাষ্ট্রীয় অগ্রযাত্রাকে গতিশীল রাখবে।’
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৭তম জন্মবার্ষিকীতে তিনি তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদ্যাপনের সকল আয়োজনের সফলতা কামনা করেন।