পোল্যান্ডের বিপক্ষে গ্রুপের শেষ ম্যাচে জয় দিয়েই শেষ করেত চায় এশিয়ান পরাশক্তি জাপান। আর এই ম্যাচে জয় পেলেই রাশিয়া বিশ্বকাপের নক আউট পর্বে উঠে যাবে মাতোতো হাসেবের নেতৃত্বাধীন ব্লু সামুরাইরা।
দুই ম্যাচ শেষে এইচ-গ্রুপে অন্য তিন দলে বিপরীতে জাপান বেশ বিস্ময়করভাবেই এবারের আসরে নিজেদের প্রমাণ করেছে। গ্রুপের ফেবারিট কলম্বিয়াকে প্রথম ম্যাচে ২-১ গোলে পরাজিত করার পরে দ্বিতীয় ম্যাচে সেনেগালের সাথে দারুন খেলে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে জাপান। যে কারণে পরের রাউন্ডে উঠার ক্ষেত্রে বেশ খানিকটা এগিয়ে রয়েছে এশিয়ান জায়ান্টরা।
ইতোমধ্যেই গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় হওয়া পোল্যান্ডের বিপক্ষে অন্তত ড্র করতে পারলেই আগামী পর্ব নিশ্চিত হবে জাপানিজদের, যেখানে তাদেরকে বেলজিয়াম কিংবা ইংল্যান্ডকে মোকাবেলা করতে হবে। যদিও এডাম নাওয়ালকার দলের বিপক্ষে পূর্ণ তিন পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়তে আশাবাদী হাসেবে। আর এর মাধ্যমে টুর্নামেন্টের বাকি সময়টাতেও নিজেদের আধিপত্য প্রমাণ করতে চায় জাপানিজ অধিনায়ক। এ সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘আমি মনে করিনা এই ম্যাচে ড্রয়ের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের খেলা উচিত। জয়ী হয়েই আমরা মাঠ ছাড়তে চাই। গত দুই ম্যাচে আমরা চার পয়েন্ট অর্জন করেছি। আগামী ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের পারফরফেন্সের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আমাদের তিন পয়েন্টের লক্ষ্যে খেলা উচিত।’
রাশিয়ায় এ পর্যন্ত জাপানের সময়টা দারুন কাটলেও পোল্যান্ড তাদের সমর্থক ও নিজ দেশের গণমাধ্যমের প্রচণ্ড সমালোচনার মুখে পড়েছে। বিশেষ করে সেনেগাল ও কলম্বিয়ার কাছে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে এখনো কোন পয়েন্ট অর্জিত না হওয়ার বিষয়টি কোনভাবেই মেনে নিতে পারছেনা পোলিশ গণমাধ্যম।
৩০ বছর বয়সী অভিজ্ঞ পোলিশ স্ট্রাইকার কামিল গ্রোসিসকি স্বীকার করেছেন এই ধরনের অভিজ্ঞতা পুরো দলের জন্যই শাস্তির মত। তিনি বলেন, ‘আমরা কোন একজন নয় পুরো দলের ওপরই হতাশ। অনেক আশা ও স্বপ্ন নিয়ে আমরা রাশিয়ায় এসেছিলাম। এখন আমাদের শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার জন্য শেষ ম্যাচটি খেলতে হচ্ছে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে বল পাওয়া তা দূরের কথা, তাদেরকে কাউন্টারও করতে পারিনি।’
কালকের ম্যাচে পোলিশ তারকা রবার্ট লিওয়ানোদোস্কি অন্তত একটি বিষয় নিশ্চিত করে মাঠে নামবেন যে খালি হাতে তিনি দেশে ফিরবেন না। আর এটাই হয়ে উঠতে পারে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যা নিয়ে জাপানকেও সতর্ক থাকতে হবে। পোলিশ তারকাকে আটকানোর একমাত্র যোগ্য খেলোয়াড় হতে পারেন সাউদাম্পটনের মায়া ইয়োশিদা। ইতোমধ্যেই ব্যক্তিগত ফর্ম দিয়ে টুর্নামেন্টে নজড় কেড়েছেন ইয়োশিদা।
এর আগে মুখোমুখি হওয়া দুটি ম্যাচেই পোল্যান্ডকে হারিয়েছে জাপান। ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করার পরে ২০০২ সালের মার্চে ২-০ গোলে জয়ী হয়েছিল জাপান। ইউরোপীয়ান কোন দলের বিপক্ষে এর আগের পাঁচটি বিশ্বকাপের ম্যচে জাপান কোন গোল করতে পারেনি। ২০১০ সালে ডেনমার্কের বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয়ের একমাত্র ম্যাচটিতে তারা গোল করতে সমর্থ হয়েছিল। ২০০২ সালে বিশ্বকাপের একমাত্র ম্যাচে পোল্যান্ড এশিয়ান কোন দলের মুখোমুখি হয়েছিল। দক্ষিণ কোরিয়ান বিপক্ষে গ্রুপ পর্বে ম্যাচটিতে পোলিশরা ২-০ গোলে পরাজিত হয়েছিল। ১৯৮৬ সালে পর্তুগালের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ের পরে এ পর্যন্ত বিশ্বকাপের কোন ম্যাচেই পোল্যান্ড গোল হজম না করে ম্যাচ শেষ করেনি। তখন থেকে এ পর্যন্ত খেলা ১০ ম্যাচে তারা ২৩ গোল হজম করেছে।