নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জে দোতলা পুরাতন একটি ভবনে বিস্ফোরণের পর আগুনে আওলাদ (৪০) নামে এক শ্রমিক মারা গেছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ১২ জন। আজ শনিবার (১৮ মার্চ) সকাল ৯টার দিকে নিতাইগঞ্জের ডালপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে ডাল, চাল, লবণ, কাগজের গোডাউন ছিল বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস৷
স্থানীয়রা জানান, ইলিয়াস দেওয়ানের মালিকানাধীন ভবনটি প্রায় শত বছরের পুরনো। ১০ বছর ধরে ভবনটির ওপরের তলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে৷ এর আগেও বেশ কয়েকবার এ ভবনে বিস্ফোরণ এবং প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ধ্বসে পড়া দো’তলা ভবনের এক তলায় আটটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অবস্থিত।
ভবনের দক্ষিণ অংশের ভাড়াটিয়া গরিবে নেওয়াজ সল্টের মালিক জামাল দেওয়ান জানান, রোজার আগের দিনগুলিতে বেশি বেচাকেনা হওয়ায় তিনিসহ ব্যবসায়ীরা অন্য দিনের চাইতে একটু আগেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসেন। সকাল সাড়ে আটটায় ভবনের উত্তর অংশের ভাড়াটিয়া রাজলক্ষ্মী ভাণ্ডারের মালিক রাজন দোকান খুলে পূজা করার জন্য আগরবাতি জ্বালানোর চেষ্টা করে। এসময় তার কক্ষে প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের পরপরই এ ভবনে আগুন লেগে যায়। এলাকাবাসী দৌড়ে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে। বাইরে আনার কিছুক্ষণের মধ্যে ভবনের রাজলক্ষ্মী ভাণ্ডারের অংশসহ উত্তর অংশ ধ্বসে পড়ে। এ সময় ভবনের পাশ দিয়ে বেশ কয়েকজন লোড-আনলোড শ্রমিক যাচ্ছিলেন। তারা আহত হন।
তিনি আরো জানান, এ ভবনটি অনেক বছরের পুরাতন। দোকানের নিচ দিয়ে গ্যাসের লাইন ও স্যুয়ারেজের লাইন আছে। প্রায়ই গ্যাসের পাইপে লিকেজ হয়ে দোকানে গ্যাস ঢুকত। এর আগেও একবার এখানে আগুন লেগেছিল।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিক মনসুর মিয়া জানান, বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। এ সময় প্রায় পঞ্চাশ গজ দূরে একজন ট্রাক চালক ও হেলপার দাড়িয়ে ছিলেন। বিস্ফোরণের পরপরই ঐ ভবনে আগুন ধরে যায়।
নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফকর উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ফায়ারের সাতটি ইউনিট এসে আগুন নেভানো শুরু করে। বেলা দশটা পঁচিশ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভবনটি অত্যন্ত পুরনো হওয়ায় এর একটি অংশ ধ্বসে পড়েছে। বাকি অংশও অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ভবনের ভেতরে ভুষা মাল, কাগজের ঠোঙ্গাসহ বিভিন্ন জিনিসে আগুন সহজে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের সঠিক কারণ তদন্তের পরে বলা যাবে।’
নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর আওলাদ হোসেন মারা যান। আওলাদ হোসেন একজন লোড-আনলোড শ্রমিক ছিলেন। তার বিস্তারিত ঠিকানা এখনো জানা যায়নি।