• বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৮ পূর্বাহ্ন

মধ্য এশিয়া সম্মেলনে কী বার্তা দিলেন শি

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ২০ মে, ২০২৩

মধ্য-এশিয়া-সম্মেলনে-কী-বার্তা-দিলেন-শিচীন-মধ্য এশিয়া সম্মেলনে উপস্থিত বিভিন্ন দেশের নেতা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বলেন, চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ পরস্পরকে সমর্থন, অভিন্ন উন্নয়ন, সাধারণ নিরাপত্তা রক্ষা এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মৈত্রীর ভিত্তিতে অভিন্ন ভাগ্যের নতুন যুগ সূচনা করবে। এই সম্মেলন নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে এবং চীন ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

গতিশীল ও সমৃদ্ধ মধ্য এশিয়া এ অঞ্চলের মানুষের উন্নত জীবনের আকাঙ্ক্ষা পূরণে সহায়তা করবে মন্তব্য করে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বলেছেন, এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার চীনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ শানসির সি’আন শহরে চীন-মধ্য এশিয়া সম্মেলনে মূল প্রবন্ধে এ কথা বলেন পূর্ব এশিয়ার দেশটির প্রেসিডেন্ট।

প্রথমবারের মতো এ সম্মেলন শুরু হয় বৃহস্পতিবার, যাতে সভাপতিত্ব করেন চীনের প্রেসিডেন্ট।

সম্মেলনে যোগ দেন মধ্য এশিয়ার ৫ দেশ কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট।

সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং বলেন, চীন ও মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশ পরস্পরকে সমর্থন, অভিন্ন উন্নয়ন, সাধারণ নিরাপত্তা রক্ষা এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মৈত্রীর ভিত্তিতে অভিন্ন ভাগ্যের নতুন যুগ সূচনা করবে। এই সম্মেলন নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে এবং চীন ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে।

চীন সম্মেলনকে চীন-মধ্য এশিয়া সহযোগিতার পরিকল্পনা, নির্মাণ ও বিকাশের জন্য সব পক্ষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সুযোগ হিসেবে নিতে ইচ্ছুক বলে জানান বৈশ্বিক পরাশক্তিটির প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, “মধ্য এশিয়ার একটি প্রবাদ হলো ‘ভ্রাতৃত্ব যেকোনো সম্পদের চেয়ে মূল্যবান।’ জাতিগত দ্বন্দ্ব, ধর্মীয় সংঘাত এবং সাংস্কৃতিক বিচ্ছিন্নতা এই অঞ্চলের বৈশিষ্ট্য নয়। সংহতি, অন্তর্ভুক্তি ও সম্প্রীতি মধ্য এশিয়ার জনগণের সাধনা।”

১৯৯২ সালে মধ্য এশিয়ার পাঁচটি দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করে চীন। ২০১৩ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং মধ্য এশিয়া সফরের সময় যৌথভাবে ‘সিল্ক রোড ইকনোমিক বেল্ট’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব উত্থাপন করেন।

গত ১০ বছরে মধ্য এশিয়ার প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয় পূর্ব এশিয়ার দেশটি। চীন ও পাঁচটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ৭০ দশমিক ২ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যা বাণিজ্যিক সম্পর্কের ইতিহাসে রেকর্ড।

সিল্ক রোড ইকনোমিক বেল্ট বর্তমানে সড়ক যোগাযোগ, রেলপথ, বিমান যোগাযোগ, তেল ও গ্যাস পাইপ লাইনসহ সার্বিক যোগাযোগের পথে পরিণত হয়েছে।

চীন-মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ১৯ মে অনুষ্ঠিত সম্মেলন দুই পক্ষের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৩১ বছরে প্রথম এ ধরনের সম্মেলন। এ সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং চীন-মধ্য এশিয়ার সম্পর্কের নতুন যুগের পরিকল্পনা তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন।

এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে মধ্য এশিয়ার সঙ্গে যৌথভাবে বৈশ্বিক উন্নয়ন, যৌথ নিরাপত্তা বাস্তবায়ন এবং মানবজাতির অভিন্ন স্বার্থে কাজ করতে চায় বলে জানায় চীন।

৮ দফা

চীন ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারে আট দফা প্রস্তাব পেশ করেন শি চিনপিং।

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন ও মধ্য এশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার জন্য এরই মধ্যে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক, কাস্টমস এবং উদ্যোক্তা ও শিল্পপতি কমিটি গঠন হয়েছে। তা ছাড়া চীন শিল্প ও বিনিয়োগ, কৃষি, পরিবহন, জরুরি ব্যবস্থাপনা, শিক্ষা এবং রাজনৈতিক দল পর্যায়ে সভা ও সংলাপব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করেছে, যাতে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর মধ্যে বিস্তৃত প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করা যায়।

তিনি বলেন, চীন বাণিজ্য সহজীকরণে আরও ব্যবস্থার প্রবর্তন করবে, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ চুক্তি উন্নত করবে, উভয় পক্ষের সীমান্ত বন্দরে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট পণ্যের দ্রুত ক্লিয়ারেন্সের জন্য সবুজ চ্যানেলের ব্যবস্থা সম্পন্ন করবে। মধ্য এশিয়ার পণ্যের ক্লাউড মেলার আয়োজন করবে চীন। বড় ধরণের পণ্যের বাণিজ্য কেন্দ্র তৈরি করবে চীন। দেশটি বাণিজ্যের আকার নতুন স্তরে উন্নীত করবে।

চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, চীন আন্তসীমান্ত পরিবহনের সংখ্যা বাড়াবে। বিদ্যমান বন্দরগুলোর আধুনিকীকরণকে ত্বরান্বিত করবে, বিমান পরিবহন খাতের উন্মুক্তকরণকে জোরালোভাবে প্রচার করবে।

জ্বালানি খাতে সহযোগিতা সম্প্রসারণ করার প্রস্তাব দেন শি। তিনি বলেন, ‘চীন-মধ্য এশিয়া জ্বালানি-শক্তি উন্নয়ন অংশীদারত্ব’ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিচ্ছে চীন।

আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখতে মধ্য এশিয়ার দেশগুলোকে তাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সক্ষমতা জোরদারে সহায়তা দিতে, স্বাধীনভাবে আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও সন্ত্রাস দমনের জন্য তাদের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করতে এবং সাইবার নিরাপত্তা খাতে সহযোগিতা করতে ইচ্ছুক বলে জানান শি জিনপিং।

চীন যৌথভাবে আফগানিস্তানের শান্তিপূর্ণ পুনর্গঠনে প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে ইচ্ছুক বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ