তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের চূড়ান্ত ধাপের (রানঅফ) ভোট অনুষ্ঠিত হবে আজ রোববার। আজকের ভোটেই তুর্কিরা নির্দিষ্ট করবেন যে তারা কাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে চান। এরদোগান কি দুই দশকের ক্ষমতার মেয়াদ বৃদ্ধি করতে পারবেন নাকি কামাল কিলিচদারুগ্লু নতুন শুরু করবেন তা জানা যাবে রাতেই। গত ১৪ মে নির্বাচনের প্রথম রাউন্ডে ৪৯.৫২ শতাংশ ভোট পেয়ে সবার আগে ছিলেন এরদোগান। তবে সামান্যর জন্য তিনি নির্ধারিত সংখ্যক ভোট পেতে সক্ষম হননি। নির্বাচনে ৪৪.৮৮ শতাংশ ভোট পেয়ে কাছাকাছি ছিলেন কামাল কিলিচদারুগ্লু। এই দু’জনের মধ্যেই চূড়ান্ত ধাপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। টিআরটি ও ডেইলি সাবাহ।
প্রথম ধাপের নির্বাচনের আগে দুই প্রার্থী যেভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিলেন, ১৪ মের পর দ্বিতীয় ধাপের জন্য প্রায় ছয় কোটি ৪০ লাখ ভোটারকে আকৃষ্ট করতে তেমন কিছুই করেননি তারা। এই সময়ে তারা বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন এবং স্বল্পসংখ্যক জনগণের সাথে মিলিত হয়েছেন। রানঅফের দুই দিন আগে প্রেসিডেন্ট এরদোগান শুক্রবার ইস্তাম্বুলে নারীদের একটি বিশাল সমাবেশে ভাষণ দিয়েছেন। তিনি রোববারের নির্বাচনে তাদের সমর্থন চেয়েছেন। এ সভার আয়োজন করে এরদোগানের দল ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (এ কে পার্টি) মহিলা শাখা। এর সময় শুরু থেকে তাকে সমর্থন দেয়ার জন্য নারীদের ধন্যবাদ জানান এরদোগান। তিনি বলেন, আমরা রোববার বিজয় অর্জন করব এবং সোমবার ইস্তাম্বুল বিজয় উদযাপন করব।
ভিন্নধর্মী ছয়টি বিরোধী দলের পাশাপাশি আরেকটি প্রভাব সৃষ্টিকারী দল এইচডিপির সমর্থন পেয়েছেন কামাল কিলিচদারুগ্লু। এ ছাড়া নিজের দল একে পার্টি ও তার জোট ছাড়াও প্রথম ধাপের নির্বাচনে তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনান ওগানের সমর্থন পেয়েছেন এরদোগান। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে থাকা তুর্কি ভোটাররা তাদের ভোট প্রদান করেছেন। সেসব ভোট বাক্সবন্দী হয়ে নিয়মমাফিক আঙ্কারায় পৌঁছে গেছে। গত বুধবার কূটনৈতিক মিশনে ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে তিনটি বিমান করে ভোটগুলো তুরস্কে আনা হয়েছে। বিদেশে কাস্ট করা সব ভোট এটিও কংগ্রেসিয়ামে ওভারসিজ ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন বোর্ডে পৌঁছে দেয়া হবে। আজ রোববার বিকেল ৫টায় অন্যদের সাথে একযোগে ভোট গণনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল (ওয়াইএসকে) থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে থাকা তুর্কিদের মধ্যে দ্বিতীয় রাউন্ডে ভোট দিয়েছেন ১৯ লাখের বেশি মানুষ। প্রথম ধাপে এই ভোট পড়েছিল ১৬ লাখ ৯১ হাজারের বেশি। সেই চেয়ে দ্বিতীয় ধাপে বেশি ভোট পড়েছে। চূড়ান্ত ধাপে যে প্রার্থী ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাবেন তিনি আগামী পাঁচ বছর তুরস্ক শাসন করবেন। আজ স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হবে। শেষ হবে বিকেল ৫টায়। ভোট শেষ হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল (ওয়াইএসকে) বেসরকারি নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে দ্বিতীয় ধাপের ভোটের আগে বিভিন্ন জরিপে বলা হয়েছে যে, চূড়ান্ত ধাপে এরদোগানের জয়ের সম্ভাবনা অনকেটাই বেড়ে গেছে। তিনি ৫৪ শতাংশ ভোট পেতে পারেন। অন্য দিকে কামালের আশাও শেষ হয়ে যায়নি বলেও অনেকে মত দিয়েছেন। তবে সব কিছু মিলিয়ে শেষ হাসি কে হাসবেন তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে রোববার দিবাগত রাত পর্যন্ত।