পশ্চিম মিয়ানমারের দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত সমুদ্র বন্দর, এই মাসে উদ্বোধন করতে সাহায্য করলো ভারত। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা করতে নয়াদিল্লি এই পদক্ষেপ নিল।
ভারতের কলকাতা বন্দর থেকে, ১ হাজার টন সিমেন্ট, মিয়ানমারের সিত্তয়ে-তে পৌঁছায় ৯ মে। এই নতুন বন্দর নির্মাণে অর্থায়ন করেছে নয়াদিল্লি।
কালাদান বহুমুখী (মাল্টি-মোডাল) ট্রানজিট পরিবহন প্রকল্পের প্রথম উদ্যোগ হলো এই ৪৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার ব্যয়ের সিত্তয়ে বন্দর। বাংলাদেশকে পাশ কাটিয়ে, মিয়ানমারের রাখাইন ও চীন রাজ্যের মধ্য দিয়ে, বৃহত্তর ভারতের সাথে স্থলবেষ্টিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সংযোগ গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য।
ভারতের বন্দর, জাহাজ ও জলপথ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, সিত্তয়ে বন্দর মিয়ানমার ও ভারতের মধ্যে উভয়মুখী পরিবহনের নতুন যুগের সূচনা করবে। সেই সাথে, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সমগ্র অঞ্চলে ‘ব্যাপক অর্থনৈতিক সম্ভাবনা’র দ্বার খুলে দেবে।
মন্ত্রণলয়টি আরো বলেছে, সিত্তয়ে থেকে কালাদান নদীর উজানে ১৫৮ কিলোমিটার জাহাজ চলাচলের পথ নির্মাণের পর, ভারতের সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য ২১০ কিলোমিটার সড়ক তৈরি হবে। এই প্রকল্প শেষ হলে, এ যোগাযোগ করিডর কলকাতা ও মিজোরাম রাজ্যের মধ্যে পরিবহনের সময় ও খরচ অর্ধেকের বেশি হ্রাস করবে।
ব্রিটেনের স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল এন্ড আফ্রিকান স্টাডিজের সিনিয়র লেকচারার অবিনাশ পালিওয়াল ভিওএ-কে বলেন, ভারত ও মিয়ানমার ১৫ বছর আগে এই প্রকল্প শুরু করেছিল। এটি আসলে জন্ম নিয়েছিল ১৯৬০-এর দশকে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রমরমা বাজারের সাথে ভারতের অর্থনীতিকে যুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে।
তিনি আরো বলেন, এই বৃহত্তর উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় ভারতের ‘লুক ইস্ট’ বা ‘অ্যাক্ট ইস্ট নীতি’র পরিপ্রেক্ষিতে। আর, বর্তমানে চীনকে মোকাবেলা করতে এবং ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক উদ্যোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে, এই প্রকল্পকে দেখা হচ্ছে। এর কারণ হলো, এটি হচ্ছে সেই অঞ্চল, যেখানে চীনের আধিপত্য রয়েছে।